নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বাসচাপায় দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন। রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন এক তরুণ। এ ছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।

সোনারগাঁয়ে নিহতরা হলেন– গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার আশরাফুল আলমের স্ত্রী কাকলী (৩৫), তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে আরিয়ান আহম্মেদ রাফি এবং রংপুরের পীরগাছা উপজেলার আব্দুল ওহাবের ছেলে অটোরিকশাচালক আনিসুর রহমান (২৩)।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাজী ওয়াহিদ মোরশেদ জানান, বিকেলে মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায় ঢাকাগামী লেনে একটি দ্রুতগতির বাসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশায় থাকা মা-ছেলে ও চালক মারা যান। বাস জব্দ করা হয়েছে। চালক ও তাঁর সহযোগী পালিয়ে গেছেন।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বাসচাপায় দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের উপজেলার ৫ নম্বর ব্রিজের ধলাটেংগুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– রাকিব (২৬) ও রিজভী (২৮)। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইল সদরের নগর জৈলফ এলাকায়। মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।

রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় বাসের ধাক্কায় সাকিব আল হাসান (১৮) নামে মোটরসাইকেল আরোহী এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলের এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই তরুণের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা দু’জন।

নিহত তরুণের আত্মীয় শরিফ মিয়া জানান, জর্দা তৈরির একটি কারখানায় কাজ করতেন সাকিব। তিনি মাতুয়াইলের দক্ষিণপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। গতকাল বিকেলে দু’জনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হন। এক পর্যায়ে মাতুয়াইলের হাসেম রোডে বেপরোয়া গতির বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনজনই রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সাকিকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নিহত ব্যক্তির নাম হযরত আলী (৫৫)। তাঁর বাড়ি নকিপুর গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুস সাত্তার জানান, সকালে বাজার নিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন হযরত আলী। এ সময় দ্রুতগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে নকিপুর বাজারের দিকে যাচ্ছিল। পৌর সদরের মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নজরুল ইসলামের বাড়ির সামনে সড়কের বাঁকানো অংশে পৌঁছালে দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সড়কে ছিটকে পড়েন হযরত আলী। দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, ট্রাক জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকাল প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক য় স ঘর ষ উপজ ল সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল