আড়াইহাজারে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে ছাড় নেই : সাদেক
Published: 8th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, বহু রক্তের বিনিময়ে কিন্তু আজকের এই নতুন স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি। কোন কারনে যেন আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা বিসর্জিত না হয়। আর কেউ আমাদের দলের নাম ভাগিয়ে কোন সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি ও মাদকের সাথে জড়িত হবেন না।
যদি কেউ এই সকল কর্মকাণ্ড সাথে লিপ্ত থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ সাহেব ব্যবস্থা নিবেন। আর আড়াইহাজারে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবে সে যত বড় নেতা বা সন্ত্রাসী হোক আমরা কিন্তু তাকে ছাড়বো না।
গোপালদী পৌর যুবদলের নেতৃবৃন্দদেরকে বলতে চাই আপনারা প্রতিটি ওয়ার্ডে পাড়া মহল্লায় পাহারার ব্যবস্থা করবেন। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা জানি কোন ধরনের পোস্টার দেওয়ার লিখন করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) নজরুল ইসলাম আজাদের নির্দেশনায় গোপালদী পৌরসভা যুবদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে কিন্তু শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা তারা এখনো পালিয়ে যায়নি। তারা কিন্তু এখনো ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আগামী দিনে এদেশে একটি জাতীয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতা আসার মাধ্যমে এদেশের পূর্ণ স্বাধীনতা আসবে ইনশাল্লাহ।
গোপালদী পৌর যুবদলের সভাপতি পদপ্রার্থী রুহুল আমিনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, নাদিম হোসাইনসহ যুবদলের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ য বদল র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।