রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার নারী দেলোয়ারা বেগমের (৩০) বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর টোংরারদহ এলাকা থেকে খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আতিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টোংরারদহ এলাকায় মাটি খুঁড়ে খণ্ডিত মাথাটি উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার সন্ধ্যার আগে পীরগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলন করে রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম বলেন, গ্রেপ্তার আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাঁর বসতবাড়ির পাশের কলাবাগান থেকে হত্যার শিকার ওই নারীর কেটে নেওয়া মাথা, একটি ব্যাগ ও বক্স উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনো উদ্‌ঘাটন করা যায়নি। তদন্ত চলছে এবং আতিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তার আতিকুল ইসলামের সঙ্গে দেলোয়ারা বেগমের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাঁরা দুজন গ্রামগঞ্জে গানবাজনা করে বেড়াতেন। দেলোয়ারা বেগমের স্বামীর সঙ্গে আগেই ছাড়াছাড়ি হয়েছে।

শনিবার রাতে মুঠোফোনে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ওই নারীকে কেন, কীভাবে হত্যা করা হয়েছে কিংবা হত্যাকাণ্ডে কতজন জড়িত ছিলেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। হত্যার ঘটনায় পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনন্ত কুমার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামের পাশে মরিচখেত থেকে মাথাহীন অজ্ঞাতনামা ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছিল থানা-পুলিশ। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় হত্যার শিকার দেলোয়ারা বেগম নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তাঁর বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরবর্তী সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে।

আরও পড়ুনপীরগঞ্জে মরিচখেত থেকে উদ্ধার নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রগঞ জ র কর ছ

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ