বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কারসাজির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে শক্তিশালী নয়। দেশে বিভিন্ন পণ্যের মজুদ ও সরবরাহের ওপর সরকারের নজরদারি রয়েছে। এই মুহূর্তে ভোজ্যতেলের বাজারে যে অস্থিরতা রয়েছে তা এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে যাবে।

সোমবার দুপুরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বাংলাদেশ পাটকল কর্পো‌রেশনের খুলনার দৌলতপুর জুট মিলের উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে কুড়িগ্রামে বন্ধ থাকা সরকারি টেক্সটাইল মিল বেসরকারি খাতে লিজের মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লিজ গ্রহীতা হিসেবে ব্যবসায়ীরা সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। এ সপ্তাহে ৩টি পাটকল লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালুর ক্ষেত্রে কেবল হাজার কোটি টাকা লোকসান ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ কিছুই হয়নি। তাই সরকারের মালিকানায় থাকা জুট ও টেক্সটাইল মিলগুলো ব্যক্তিগতখাতে ছেড়ে দেওয়ায় পরিকল্পনা রয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, দেশে বিদ্যমান সব পাটকল চালু রাখতে বছরে প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন পাটের প্রয়োজন। কিন্তু দেশে পাটের উৎপাদন কেবল ১২ লাখ মেট্রিক টন। সারাবিশ্বে বার্ষিক পাটের উৎপাদন মাত্র ২৫ লাখ মেট্রিক টন। সেক্ষেত্রে কেবল পাট দিয়ে এতোগুলো প্রতিষ্ঠান চালু রাখা বাস্তবসম্মত নয়। তাই পাটকলগুলো বেসরকারি খাতে লিজ প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করে পাটভিত্তিক শিল্পের পাশাপাশি অন্য শিল্প কারখানা স্থাপনের সুযোগ রাখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলটি বেসরকারি উদ্যোগে চালু হওয়ায় প্রায় ৭০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে এখানে আরো ৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ধরনের সফল উদ্যোগ ও বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পথ খুলে যাবে। মিলটিতে বেসরকারি উদ্যোগে পাটপণ্য এবং জুতার উৎপাদন একসঙ্গে চালু রেখে ইতিবাচক ও লাভজনক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের উদ্ভাবনী উদ্যোগ সরকারিভাবে বাস্তবায়ন ততটা ফলপ্রসূ হয় না।

মিল পরিদর্শনকালে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও দৌলতপুর জুট মিলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট ভ জ যত ল উপদ ষ ট ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ