ট্রান্স ন্যাশনাল ইসলাম বিদ্বেষীদের হয়ে সর্বাত্মক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে দাবি করে সরকারকে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।

দলটির দাবি, সোমবার অমর একুশে বইমেলায় দুই জন ছাত্রকে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মারধর করে উল্টো জঙ্গিবাদের অপবাদ ছড়িয়ে মুসলমানদের বিমানবিকীকরণের অপরাধ করা হয়েছে। যার সঙ্গে ট্রান্স ন্যাশনাল ইসলামবিদ্বেষীদের বয়ান ও অপপ্রচারের হুবহু মিল আছে। ফলে বইমেলার ঘটনাকে বাংলাদেশের মুসলমানদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র গণ্য করা সময়ের দাবি।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জুলাই বিপ্লবে সম্পৃক্ত ছাত্রজনতা গঠিত প্রথম দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অমর একুশে বইমেলার ১২৮ নম্বর স্টলে সব্যসাচী প্রকাশনী কুখ্যাত ইসলামবিদ্বেষী ও জুলাই গণহত্যা সমর্থক তসলিমা নাসরিনের ‘চুম্বন’ নামে একটি বই বিক্রি করে আসছিল। সচেতন তরুণ নাগরিকরা এটি জানতে পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বই মেলার মাঠের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সব্যসাচী প্রকাশনীর প্রকাশক মেহরান সানজানাকে তসলিমা নাসরিনের বই সরিয়ে নিতে বলেন।

কিন্তু মেহরান সানজানা নিজের অপরাধকে আড়াল করতে ফেসবুকে মতলবি প্রচারণা চালান। সেখানে তিনি সব্যসাচী প্রকাশনীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি স্টল থেকে তসলিমা নাসরিনের বইও সরাননি। ফলে সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকজন ছাত্র মেলায় গিয়ে দেখতে পান, সব্যসাচী প্রকাশনী তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করছে।

তখন তারা জিজ্ঞেস করেন, একজন স্বঘোষিত নাস্তিক ও জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী, নিয়মিত শহীদ ও উপদেষ্টাদের নিয়ে বিদ্রুপ মন্তব্যকারীর বই কেন আপনাদের স্টলে জায়গা পায়? এর জবাবে সব্যসাচীর প্রকাশনীর স্টলে থাকা মেহরান সানজানার স্বামী শতাব্দী ভব ছাত্রদের তুই তুকারি সম্বোধন করেন এবং বলেন, ‘তসলিমার পক্ষে আমি একাই লড়ে যাব।’ একপর্যায়ে তিনি দুইজন মাদ্রাসা ছাত্রকে কিল-ঘুষি দেন এবং ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে ছাত্রদের জঙ্গি ও মৌলবাদী সম্বোধন করেন।

এতে উপস্থিত ছাত্র-জনতা শতাব্দী ভবের ঔদ্ধত্যের জবাবে প্রতিবাদী হয়ে উঠলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং বিতর্কিত ১২৮ নম্বর স্টল বন্ধ রাখে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, মুসলমানদের উস্কানি দিয়ে, উত্তেজিত করে উল্টো তাদের বিমানবিকীকরে করে হত্যাযোগ্য করা আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যাপকভাবে পরিচিত ইসলাম বিদ্বেষী বর্ণবাদের বহুল ব্যবহৃত একটি ধরণ। সোমবার বইমেলার ঘটনায় একই ধরনের বর্ণবাদ চর্চা করা হয়েছে। একদিকে প্রচার করা হয়েছে, ‘তৌহিদি জনতা বইমেলায় হামলা করেছে’। আরেকদিকে ভারতের কুখ্যাত মুসলিম বিদ্বেষী পত্রিকা আনন্দবাজার এ সব্যসাচী প্রকাশনীর প্রকাশক মেহরান সানজানার বরাতে প্রচার করেছে ‘বইমেলা জঙ্গিদের’।

ফলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, মুসলমানদের বিমানবিকীকরণের মধ্য দিয়ে হত্যাযোগ্য করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বাংলাদেশেও ঘনীভূত হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন হতে হবে। আর অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোন ঘটনার বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে জাতিকে সঠিক তথ্য অবহিত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ষড়যন ত র বইম ল ইসল ম তসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন