বরগুনায় বাস-মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে নানা-নাতিসহ তিনজন নিহত
Published: 11th, February 2025 GMT
বরগুনার আমতলী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে নানা-নাতিসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচালা গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৫৫), বাইনবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আতাহার গাজী (৬০) এবং তাঁর নাতি উপজেলার চাওড়া লোদা গ্রামের হিমু আকনের ছেলে আদিব (৭)। এ ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি জব্দ করলেও চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে গেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে আসা কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাস বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। আমতলীর আমড়াগাছিয়া এলাকার রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে বাসটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহিন্দ্রাটি সড়কের পাশে পড়ে যায় এবং মাহিন্দ্রার পেছনে থাকা একটি মোটরসাইকেল চাপা দেয় বাসটিকে। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলচালক শহীদুল ইসলাম নিহত হন। স্থানীয় লোকজন মাহিন্দ্রার যাত্রী আতাহার গাজী, তাঁর নাতিসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাতিকে মৃত ঘোষণা করেন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আতাহার গাজীও মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান বলেন, ইউনিক পরিবহনের বাসটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পরে মাহিন্দ্রার পেছনে থাকা মোটরসাইকেলটি চাপা দেয় ওই বাস। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন এবং মাহিন্দ্রার তিনজন যাত্রী গুরুতর আহত হন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ মাহমুদ বলেন, শিশুসহ দুজনকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। আহত অন্য দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের–ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত আতাহারের মেয়ে সালমা প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় তাঁর বাবা ও বোনের ছেলে নিহত হয়েছে। বাবা নাতিকে নিয়ে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে বাসচাপা দেয়। বোনের ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাবাকে বরিশাল নেওয়ার পথে লেবুখালী এলাকায় মারা যান।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন বর শ ল স ঘর ষ ত নজন উপজ ল ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় ডাকাত তকমা দিয়ে দু’জনকে পিটিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দেশীয় অস্ত্র। ছবি তুলে ও ভিডিও করে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। উত্তেজিত জনতা তাদের ঘিরে রাখে। যদিও অনেকেই জানতেন না, ঘটনাটি সাজানো। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল আহত দু’জনকে উদ্ধার করে। সোমবার রাতে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই তাদের হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
উদ্ধার দু’জন হলেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরহেয়ার এলাকার মজিবুল হকের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের মোল্লাবাজার এলাকার মো. আশরাফের ছেলে মো. আসিফ। এদের মধ্যে আরিফ পেশায় রিকশাচালক।
স্থানীয়রা জানান, জাহাজমারা আমতলী বাজারের পশ্চিম পাশে রাস্তার চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন জহির চেরাং, অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন কাউসার। কাউসারপক্ষ অনেক দিন থেকে চরটির দখল নিয়ে আছে। ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে জহির চেরাংয়ের লোকজন চরটির দখল নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। পরে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও দু’জনকে ধরে তারা বাজারে নিয়ে আসে। পরে ওই দু’জনকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পরিকল্পিতভাবে ডাকাত নাটক সাজানো হয়।
ছবি তুলে ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ায় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল অবরুদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের দুটি গোয়েন্দা দলের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।
আসিফের বাবা আশরাফ জানান, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত নেই। অথচ তাঁকে ডাকাত বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর ছেলে নিরপরাধ দাবি করেন তিনি।
আমতলী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লিটন জানান, চরের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়। পরে নৌবাহিনী এসে তাদের নিয়ে যায়। তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা, তাঁর জানা নেই।
হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, উদ্ধার দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।