বরগুনার আমতলী উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষে নানা-নাতিসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচালা গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম (৫৫), বাইনবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আতাহার গাজী (৬০) এবং তাঁর নাতি উপজেলার চাওড়া লোদা গ্রামের হিমু আকনের ছেলে আদিব (৭)। এ ঘটনায় পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি জব্দ করলেও চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে গেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে আসা কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাস বরিশাল-কুয়াকাটা সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। আমতলীর আমড়াগাছিয়া এলাকার রহমান ফিলিং স্টেশনের সামনে বাসটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহিন্দ্রাটি সড়কের পাশে পড়ে যায় এবং মাহিন্দ্রার পেছনে থাকা একটি মোটরসাইকেল চাপা দেয় বাসটিকে। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলচালক শহীদুল ইসলাম নিহত হন। স্থানীয় লোকজন মাহিন্দ্রার যাত্রী আতাহার গাজী, তাঁর নাতিসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাতিকে মৃত ঘোষণা করেন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আতাহার গাজীও মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান বলেন, ইউনিক পরিবহনের বাসটির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মাহিন্দ্রার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পরে মাহিন্দ্রার পেছনে থাকা মোটরসাইকেলটি চাপা দেয় ওই বাস। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলের চালক নিহত হন এবং মাহিন্দ্রার তিনজন যাত্রী গুরুতর আহত হন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ মাহমুদ বলেন, শিশুসহ দুজনকে হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। আহত অন্য দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের–ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত আতাহারের মেয়ে সালমা প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় তাঁর বাবা ও বোনের ছেলে নিহত হয়েছে। বাবা নাতিকে নিয়ে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে বাসচাপা দেয়। বোনের ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাবাকে বরিশাল নেওয়ার পথে লেবুখালী এলাকায় মারা যান।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আরিফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন বর শ ল স ঘর ষ ত নজন উপজ ল ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

‎পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। ‎‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত

‎নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।

‎পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

‎নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।” 

‎তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”

‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।” 
 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ