ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্যারিসে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। জেডি ভ্যান্স ও উষা চুলুকুরি ভ্যান্স দম্পতির ছেলে বিবেকের জন্মদিনে দারুণ সময় কাটিয়েছেন তিনি। ভ্যান্স পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁর ‘চমৎকার কথা-বার্তা’ হয়েছে।

 পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মোদি লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎটি চমৎকার ছিল। নানা বিষয়ে আমাদের মধ্যে চমৎকার কথা-বার্তা হয়েছে। তাঁদের ছেলে বিবেকের শুভ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত।’

জবাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জেডি ভ্যান্স লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি অমায়িক ও দয়ালু। আমাদের বাচ্চারা তাঁর উপহারগুলো বেশ পছন্দ করেছে। চমৎকার কথা-বার্তার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

এআই অ্যাকশন সামিটে যোগ দিতে ফ্রান্সে ছিলেন মোদি। এই শীর্ষ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে তিনি সহসভাপতি ছিলেন। সম্মেলনের ফাঁকে মাখোঁ-মোদির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই বৈঠক সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি।

সপ্তাহব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক এই শীর্ষ সম্মেলনটি মঙ্গলবার শেষ হয়। সম্মেলনে বিভিন্ন বিশ্ব নেতা, নীতিনির্ধারক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। 

প্যারিস থেকে মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে সেখানে তিনি স্থানীয় সময় মঙ্গল ও বুধ (১২-১৩ ফেব্রুয়ারি) অবস্থান করবেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটা তাঁদের মধ্যে প্রথম বৈঠক।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আরিফুলসহ সিলেট বিএনপির নেতাদের লন্ডন সফর, নানা আলোচনা

গত রোববার হঠাৎ লন্ডন সফরে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। শুধু আরিফুল নন, ইতোমধ্যে সিলেটের একাধিক নেতা প্রকাশ্যে বা গোপনে লন্ডন সফর করেন। শোনা যাচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করতেই তারা লন্ডন যাচ্ছেন।

সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে লন্ডন যান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যান উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী। তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিলেট-৬ আসনের (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দেশে এসেও নিবার্চনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলেছেন।  

সম্প্রতি লন্ডন থেকে দেশে ফিরে সিলেট-৪ আসনের বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জমান সেলিম। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন  বলে জানা যায়।

একই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম সম্প্রতি লন্ডন সফর করেন। তিনি দেশে ফিরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। একই আসনে আরও একাধিক নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
 
সর্বশেষ গত রোববার লন্ডনে যান আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি লন্ডনে যাওয়ার পর সিলেট বিএনপির রাজনীতি বইছে নতুন হওয়া। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দুটি মিশন নিয়ে গেছেন আরিফুল হক। এর একটি হচ্ছে- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া, অপরটি হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। লন্ডনে গিয়ে তিনি বলেন, 'আমি আপনাদের দেখতে এসেছি। ৪-৫ দিন লন্ডনে থাকবো।'

আরিফুল হক সিটি নির্বাচনে নাকি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, সার্বিক বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শ নিতে তিনি লন্ডনে গেছেন। তার পরামর্শ পাওয়ার পর সিলেটের নির্বাচনী মাঠে নামবেন তিনি। 

এদিকে, সোমবার রাতে লন্ডনে আরিফুল হক তার ঘনিষ্ঠ শতাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বর্তমানে মাঠে থাকা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নাম না বললেও নতুন রাজনৈতিক সংগঠনের কথা সরাসরি বলেন। তার বক্তব্য ঘিরে সিলেটে জামায়াত ঘরানার রাজনৈতিক নেতারা স্যোশাল মিডিয়ায় সরব হয়ে উঠেছেন।  কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, অন্য পার্টি বলতে সাবেক মেয়র আরিফ কি জামায়াতকে বোঝাতে চেয়েছেন? 

ভার্চ্যুয়াল মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়া ভিডিওতে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দু-একটা তুচ্ছ ঘটনাকে কিছু রাজনৈতিক অন্য পার্টি, অন্য প্ল্যাটফরমে যা আপনারা ভালোভাবেই বুঝতেছেন, যারা এখনই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন, বিভিন্ন হাই-অফিসিয়াল পোস্টে তাদের নিজেদের লোক সেটআপ করে ফেলছে। সেখানে আমাদের মানুষগুলো নেই। আমাদের দু-চার জন অ্যাটর্নি জেনারেল, আর দু-চারটা পোস্ট দেখলেই মনে করবেন না সব আমাদের। তারা ভালো করে জানে ভোটে গেলে বিএনপি’র সঙ্গে কোনোভাবেই রিটার্ন করতে পারবে না। কাজেই তারা ওই ম্যাকানিজম শুরু করেছে সেখানে নির্বাচনকে একটু দূরে ঠেলে দিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনে তাদের লোকগুলোকে সেটআপ করা।' 

সম্পর্কিত নিবন্ধ