পিচ্ছিল মহাসড়কে হঠাৎ কাত হয়ে যায় চলন্ত মোটরসাইকেল। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে দুই আরোহী ছিটকে পড়লে তাঁদের চাপা দেয় লবণবোঝাই একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন একজন। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়া উপজেলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম সাইফুদ্দীন জামিল (২৭)। তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হুলাইন এলাকার মোহাম্মদ ইউনুছের ছেলে। আহত হয়েছেন একই এলাকার বাসিন্দা রেজাউল করিম (২৬)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুই বন্ধু সাইফুদ্দীন ও রেজাউল একটি মোটরসাইকেল নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বেড়ানো শেষে গতকাল রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার ছদাহার হাঙর রাজঘাটা এলাকার এস আই পার্ক কনভেনশন হলের সামনে পৌঁছান। এ সময় পিচ্ছিল মহাসড়কে তাঁদের মোটরসাইকেলটি কাত হয়ে যায়। এর পরপরই দুই আরোহীকে পেছনে থাকা চট্টগ্রামমুখী একটি ট্রাক চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে সাইফুদ্দীন নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় রেজাউল করিমকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠান।

দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি দোহাজারী হাইওয়ে থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এম এ মতিন নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শীত মৌসুমে রাতের বেলা শিশির ও লবণবোঝাই ট্রাকের ঝরে পড়া পানিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে থাকে। এ ধরনের পরিস্থিতি পিচ্ছিল হওয়া সড়কে একটি মোটরসাইকেল কাত হয়ে দুই আরোহী ছিটকে পড়েছেন। এ সময় তাঁদের একটি ট্রাক চাপা দিয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মোটরসাইকেল ও ট্রাকটি জব্দ করে হাইওয়ে থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে ট্রাকটির চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বনভূমি উজাড় ও গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে যদি বলা হয় যে আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই, তাহলে খুব বেশি ভুল হবে না। ৮০ সাল পর্যন্ত এখানে বন ছিল, গাছপালা ছিল, ঝোপঝাড় ছিল। এই অঞ্চলে বা দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনো অংশ কম দায়ী নয়।

সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের চেয়ে বড় আকারের বনভূমি এখন মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী কিংবা সিলেটে দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে এই অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো সবার ভাবতে হবে।

পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে শীতের অনুভূতি পাওয়া যেত। এখন কার্তিক মাসেও শীতের অনুভূতি পাওয়া যায় না। যারা আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা প্রকৃতি সচেতন ছিল। তাই তাদের ওপর খুব বেশি ভূমি ধস হয়েছে শোনা যায় না। তাদের বাড়িঘরেও হয়নি। প্রকৃতিকে যারা চেনে না, তাদের ওপর ভূমিধস হয়।

বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব এ কে এম আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এসম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বৃক্ষমেলায় ২১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ