ভারতের কাছ থেকে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা চাই ভারত সরকার তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের সরকারের হাতে দেবে এবং তাকে (শেখ হাসিনা) বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া তার সহযোগী যারা ছিল তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল এ কথা বলে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে কবে বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে। এ বিষয়ে সবার আগ্রহ থাকে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। যে সত্য ঘটনাগুলো হয়েছে, এগুলো প্রকাশ পেয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো যখন এই ঘটনাগুলো বলি, তখন কেউ বিশ্বাস করতে চায় না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, গণহত্যা হয়েছে। তারই নির্দেশে এখানে গণহত্যা হয়েছে, এটা আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে। এদেশের মানুষকে তিনি অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। যত মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্র হত্যা সবকিছু তার নির্দেশেই হয়েছে। সুতরাং, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে হাসিনা ফ্যাসিস্ট।’

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘এটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে নাকি হবে না। কোন পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে নাকি নেবে না।’

আয়নাঘর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু পার্টি নয়, দেশের বিভিন্ন মানুষকে গুম করেছে। তুলে এনে জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে।’

আনুপাতিক হারে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এটার পুরো বিরোধী। মানুষ এটাতে অভ্যস্ত নয়।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমরা আগে বলেছি, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার দুটো কারণে—এক.

বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা। ‍দুই. গভার্নেন্স (সুশাসন) চালু করা। অর্থনীতি ঠিক হয়ে যাবে। ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া হচ্ছে না, সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে। ইলেকটেড গভর্নমেন্ট না হলে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন।’

নির্বাচনের ‘ডেড লাইন’ সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না। ডিসেম্বরের মধ্যে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নির্বাচন করার চেষ্টা করছেন।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে

সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।

শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।

পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।

শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাহরুখ খান: গণহত্যার সময় বিলিয়নিয়ার হওয়ার অর্থ কী
  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল