পাবনার সাঁথিয়ায় সুজন (৪০) নামের এক অটোভ্যান চালককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ভাড়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে গেছে তারা। 

আজ শনিবার সকালে উপজেলার সাঁথিয়া-মাধপুর আঞ্চলিক সড়কের স্বরপ এলাকার পুকুর থেকে সুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সুজন উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের খয়েরবাড়িয়া গ্রামের ইসহাক আলী প্রামাণিকের ছেলে।

পরিবার ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে সুজন প্রায় লাখ টাকা খরচ করে একটি অটোভ্যান কিনেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে তাকে ভাড়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় কে বা কারা। পরে সুজনের মোবাইল ফোন বন্ধ পান স্বজনরা। রাত পেরিয়ে গেলেও বাড়ি ফিরেননি। আজ সকালে স্থানীয়রা পুকুরে তার লাশ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে সুজনের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ শনাক্ত করেন।

নিহত সুজনের ভাই আব্দুল ওহাব জানান, সুজন জোড়গাছা গ্রামে তার শ্বশুর আজগর আলীর বাড়িতে থাকেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কে বা কারা মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সুজন অটোভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। আমরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকি। আজ সকালে স্থানীয়রা সাঁথিয়া-মাধপুর আঞ্চলিক সড়কের স্বরপ সেতুর পাশে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে খবর দেয়। পরে সেখানে গিয়ে আমার ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করি। 

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের গলায় চিহ্ন আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অটোভ্যানের জন্যই তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন স জন র

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ