আবাসিক হলের লিফটের ভিতরে সিগারেট খেতে নিষেধ করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে আরো মারধর করা হবে বলেও হুমকি দেন ওই ছাত্রদল নেতা।

ভুক্তভোগী নাইমুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত পারভেজ মোশাররফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত পারভেজ সিগারেট নিয়ে লিফটে প্রবেশ করছিলেন। এ সময় ভুক্তভোগী নাইমুর লিফটে সিগারেট নিয়ে উঠলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে- এমন কথা বলে সিগারেট নিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এতে দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে নাইমুরকে মারধর করেন। মারধর শেষে নাইমুরকে শিবির ট্যাগ দেন এবং পরবর্তীতে তাকে হলের ভেতরে পেলে মারবেন বলেও হুমকি দেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান দুর্জয় বলেন, “আমার ক্যান্ডিডেট এসেছিল। তাকে বিদায় দিয়ে রুমে ফিরছিলাম। আমি তাজউদ্দীন হলের ৪ নম্বর লিফট থেকে বের হওয়ার সময় দেখি একটা ছেলে সিগারেট হাতে লিফটের ভিতরে প্রবেশ করে। তখন আমি তাকে বলি হল কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধ আছে লিফটে সিগারেট খাওয়া যাবে না, এটা বিপজ্জনক। তখন সে উত্তেজিত হয়ে যায়। পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে মাইক্রোবায়োলজি ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেয়। তখন আমার পরিচয় দিয়ে বলি, আমি ৪৮তম ব্যাচের লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থী।”

ভুক্তভোগী বলেন, “সে আমার জুনিয়র। এটা জানার পরে সে আরো ক্ষিপ্র হয়ে আমাকে তুইতোকারি শুরু করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বারবার শিবির ট্যাগ দেয় এবং আমার গায়ে হাত তোলে। আশেপাশের লোকজন তখন আমাদের আলাদা করে দেয়। সে চলে যাওয়ার সময় আমাকে হলে ফেলে ইচ্ছামতো মারবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি অনিরাপদবোধ করছি এবং আমি এর বিচার চাই।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে পারভেজ মোশাররফের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.

লুৎফুল এলাহী জানান, অফিস বন্ধ থাকায় তিনি অভিযোগপত্র হাতে পাননি। 

তিনি বলেন, “আমাকে ফোন দিয়েছিল ওই শিক্ষার্থী। ঘটনাটি আমি জেনেছি। আমাদের হল অফিস বন্ধ আছে। আগামীকাল খুলবে। ভুক্তভোগী যদি লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা একটা তদন্ত কমিটি করব। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত জউদ দ ন ছ ত রদল ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ