জাবি ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে সিনিয়রকে মারধরের অভিযোগ
Published: 15th, February 2025 GMT
আবাসিক হলের লিফটের ভিতরে সিগারেট খেতে নিষেধ করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে আরো মারধর করা হবে বলেও হুমকি দেন ওই ছাত্রদল নেতা।
ভুক্তভোগী নাইমুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত পারভেজ মোশাররফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত পারভেজ সিগারেট নিয়ে লিফটে প্রবেশ করছিলেন। এ সময় ভুক্তভোগী নাইমুর লিফটে সিগারেট নিয়ে উঠলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে- এমন কথা বলে সিগারেট নিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এতে দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে নাইমুরকে মারধর করেন। মারধর শেষে নাইমুরকে শিবির ট্যাগ দেন এবং পরবর্তীতে তাকে হলের ভেতরে পেলে মারবেন বলেও হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান দুর্জয় বলেন, “আমার ক্যান্ডিডেট এসেছিল। তাকে বিদায় দিয়ে রুমে ফিরছিলাম। আমি তাজউদ্দীন হলের ৪ নম্বর লিফট থেকে বের হওয়ার সময় দেখি একটা ছেলে সিগারেট হাতে লিফটের ভিতরে প্রবেশ করে। তখন আমি তাকে বলি হল কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধ আছে লিফটে সিগারেট খাওয়া যাবে না, এটা বিপজ্জনক। তখন সে উত্তেজিত হয়ে যায়। পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে মাইক্রোবায়োলজি ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেয়। তখন আমার পরিচয় দিয়ে বলি, আমি ৪৮তম ব্যাচের লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থী।”
ভুক্তভোগী বলেন, “সে আমার জুনিয়র। এটা জানার পরে সে আরো ক্ষিপ্র হয়ে আমাকে তুইতোকারি শুরু করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বারবার শিবির ট্যাগ দেয় এবং আমার গায়ে হাত তোলে। আশেপাশের লোকজন তখন আমাদের আলাদা করে দেয়। সে চলে যাওয়ার সময় আমাকে হলে ফেলে ইচ্ছামতো মারবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি অনিরাপদবোধ করছি এবং আমি এর বিচার চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে পারভেজ মোশাররফের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “আমাকে ফোন দিয়েছিল ওই শিক্ষার্থী। ঘটনাটি আমি জেনেছি। আমাদের হল অফিস বন্ধ আছে। আগামীকাল খুলবে। ভুক্তভোগী যদি লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা একটা তদন্ত কমিটি করব। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত জউদ দ ন ছ ত রদল ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?