আওয়ামী লীগের বিচারে হস্তক্ষেপ করলে আবারও প্রতিবাদ হবে: সারজিস আলম
Published: 15th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, স্বৈরাচার ও খুনি আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাঁরা কোনো হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন না। এমন কোনো কিছু দেখলে জাতীয় নাগরিক কমিটি অথবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওই ব্যক্তি বা প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে আবার প্রতিবাদ শুরু করবে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বের হয়ে সারজিস আলম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় এবং প্রধান দায়িত্ব খুনিদের বিচার করা উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা সমস্যা হচ্ছে নেতারা খুনি হাসিনার মতো খুব সহজে সেফ এক্সিট পেয়ে যায়। এই গণ-অভ্যুত্থানে যারা আন্দোলনে ছিল, তাদের কিন্তু এই খুনি হাসিনা ও তাঁর দোসররা ছাড়বে না। সে জায়গায় আমরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ—কোনো ধরনের নেগোসিয়েশনের চিহ্ন দেখতে চাই না। যারা খুনি, যারা খুনিদের দোসর, তারা যে মত ও দলেরই হোক না কেন, তাদের শাস্তি হতে হবে।’
সারজিস আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়ে একটা দায়িত্ব পালন করেছে। এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর যাঁরা অগ্রজ রয়েছেন, তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যে আওয়ামী লীগ ৫ আগস্ট বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক হয়েছে, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ—এসব নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গণহত্যা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। তাদের নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে তারা (রাজনৈতিক দলগুলো) যদি নেতৃত্ব দিতে না পারে, এর দায় আগামী দিনগুলোতে তাদের বহন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।