সাতক্ষীরার পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল অনুপম ঘোষের (২৬) গলায় গামছা প্যাঁচানো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরে তাঁর ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

অনুপম ঘোষ বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আশীষ কুমার ঘোষের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরে জি এম আলমগীর হোসেনের বাসায় ভাড়া থাকেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন আলী বলেন, কনস্টেবল অনুপম কুমার ঘোষ গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ লাইনের ভেতরে ম্যাগাজিন গার্ড হিসেবে কর্তব্য শেষ করে বাসায় ফিরে যান। এরপর তিনি ঘরের মধ্যে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। রাত চারটার দিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই বাসায় অনুপম ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী দীপা রায় থাকতেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আক্তার মাহমুদ বলেন, কনস্টেবল অনুপম ঘোষকে রাত চারটার দিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

এ বিষয়ে স্ত্রী দীপা রায়ের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

শামিনুল হক বলেন, ‘অনুপম ঘোষ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চলছিল বলে শুনেছিলাম। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ