ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বোনের পর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিউলি আক্তার মারা যান। এর প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর আজ রোববার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তাঁর ভাই সুমন রহমান। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ আরও নয়জন চিকিৎসাধীন আছেন।

শিউলি আক্তার (৩২) ও সুমন রহমান (৩০) মুন্সিগঞ্জের নিমতলী এলাকার আলাউদ্দিনের মেয়ে।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বলেন, আগুনে সুমনের শরীরের ৯৯ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আর শিউলির শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা বলেন, গত শুক্রবার আশুলিয়ার গোমাইল এলাকায় ভাই সুমন রহমানের ভাড়া বাসায় স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বেড়াতে যান শিউলি। ওই বাসায় সুমন তাঁর স্ত্রী শারমিন ও তাঁদের দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া ওই দিন সুমনের ভাই সোহেল, সুমনের মা সূর্যবানু ও ফুফু জহুরা বেগম ওই বাসায় যান। বিকেল থেকে বাসায় রান্নাবান্না চলছিল। মশার উপদ্রবের কারণে সন্ধ্যার খানিক আগেই বাসার সব জানালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে রান্নাঘরে আবার গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গেলে বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তেই ঘরময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাসার সবাই দগ্ধ হন। পরে তাঁদের আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের ঢাকায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

গ্যাসের লিকেজ থেকে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্বজনদের ধারণা।

চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বলেন, আগুনে সূর্যবানুর শরীরের ৭ শতাংশ, মোছা.

জহুরা বেগমের ৫ শতাংশ, মো. মনির হোসেনের ২০ শতাংশ, সোহেল রানার ১০ শতাংশ, শারমিনের ৪২ শতাংশ, ছামিন মাহমুদের ১৪ শতাংশ, মাহাদীর ১০ শতাংশ, সোয়ায়াদের ২৭ শতাংশ ও মোছা. সুরাহার ৯ শতাংশ পুড়ে গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন রহম ন স মন র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ