‘পীর’ মিজান ও তার জামাতা গ্রেপ্তার
Published: 18th, February 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় আলোচিত ‘পীর’ মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আজ মঙ্গলবার সকালে তাকে নিজ আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার জামাতা মো. আবু নাইমকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, প্রতারণাসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ এনে শ্যামনগরের শংকরকাঠি গ্রামের সিদ্দিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মিজানুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামের মৃত দীনদার গাজীর ছেলে। আবু নাইম শরীয়তপুরের সখিপুর থানার মোল্যাবাজার গ্রামের নুরুল হুদার ছেলে। নিজেকে ওলি দাবি করে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
মিজানকে ‘ভণ্ড’ আখ্যায়িত করে শুক্রবার তার আস্তানা গুড়িয়ে দিতে কয়েক’শ মানুষ আস্তানাঅভিমুখে পদযাত্রা করেন। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উত্তেজিত জনতাকে আটকে দেয়। এ সময় উপজেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা ওলামা পরিষদের নেতারা মিজানকে আইনের আওতায় আনতে তিনদিনের সময় বেধে দেন।
মামলার বাদি সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মিজানের নির্দেশনায় তার জামাতা আবু নাইম ‘শরীয়তের মানদণ্ডে ওলিগণের হালত’ নামে একটি বই বের করেন। ওই বাইয়ের বিভিন্ন অংশে আল্লাহ ও তার রাসূল (স.
তিনি অভিযোগ করেন, মিজান অনেকের মত তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নেন। পরে টাকা চাইলে ‘মাওলা দিচ্ছে না’ জানিয়ে দিতে টালবাহানা শুরু করেন।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা বলেন, মামলার আসামি হিসেবে মিজানুর রহমান ও আবু নাইমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবু নাইমের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘শরীয়তের মানদণ্ডে ওলিগণের হালত’ নামের বইয়ের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এদিকে ‘পীর’ মিজানের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আনন্দ মিছিল করেছে সাধারণ মানুষ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন গ র প ত র কর শ য মনগর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।