আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) চালু হয়েছে গত ২ জানুয়ারি। চালুর মাত্র ১ মাস ১৭ দিনের মধ্যে এই বিএসডব্লিউ সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমদানি-রপ্তানি পণ্য চালানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক লাখের বেশি সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (সিএলপি) দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। যেসব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে এমন সনদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও পরিবেশ অধিদপ্তর।

বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো বা বিএসডব্লিউর মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (CLP)-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম করা যাচ্ছে। এতে সরকারি কাজে ব্যক্তিগত বা সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হচ্ছে। হয়রানি, দুর্নীতি, অনৈতিক লেনদেনের সুযোগ কমে যাচ্ছে। এতে পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় ও খরচ কমছে বলে মনে করে এনবিআর।

এনবিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামী ১ মার্চ থেকে আমদানি ও রপ্তানি পণ্য চালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে অন্য সংস্থাগুলোর সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট বিএসডব্লিউ সিস্টেম থেকে দেওয়া সম্ভব হবে।

সিঙ্গেল উইন্ডোতে যা আছে

আমদানিকারক-রপ্তানিকারকেরা এখন থেকে সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সংগ্রহ এবং পণ্য চালান খালাসের জন্য কেবল একটি সিঙ্গেল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দাখিল করতে পারছেন। এটি বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম। দাখিল করা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের মাধ্যমে পণ্য চালান দ্রুততম সময়ে খালাস নিতে পারবেন। এতে সময় ও খরচ—দুটিই বাঁচবে।

২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্টে (টিএফএ) স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। চুক্তির ১০ দশমিক ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব সদস্যরাষ্ট্র সিঙ্গেল উইন্ডো স্থাপনের প্রচেষ্টা নেবে। এনবিআরের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে এটি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা ও শুল্ক ফাঁকি প্রতিরোধে বিশ্বব্যাংকের ঋণসহায়তায় ২০১৭ সালে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৩৮টি দপ্তরের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।

মূলত দুই সিস্টেমের মাধ্যমে পুরো ব্যবস্থাটি সচল থাকবে। এই দুটি সিস্টেম হলো বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) ও অ্যাডভান্সড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এআরএমএস)। আমদানি ও রপ্তানিকারকেরা বিএসডব্লিউর মাধ্যমে নিজের কাঙ্ক্ষিত সেবার আবেদন করবেন এবং এআরএমএসের মাধ্যমে যেকোনো সহায়তা নিতে পারবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ স ঙ গ ল উইন ড আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য না করার নির্দেশনা সিলেট জেলা বিএনপির

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য কিংবা তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। দলের কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম।
এদিকে দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচার–বহিভূর্ত মন্তব্য করায় গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবেদুর রহমানকে (আছকির) সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফখরুল ইসলামকে (ফারুক) সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন কিছু ইউনিটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কার্যক্রমে অনভিপ্রেত ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ উপজেলা, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, কটূক্তি ও বিভাজন সৃষ্টিকারী পোস্ট প্রচারিত হয়েছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী।

বিএনপি সব সময় সংগঠনের ঐক্য, শালীনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর কাছ থেকে বিভেদমূলক আচরণ, বিদ্বেষ ছড়ানো বা প্রকাশ্যে অপপ্রচার কখনোই কাম্য নয়। অতএব জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য বা শেয়ার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।

যোগাযোগ করলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু নেতা-কর্মীকে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি একটি নির্দেশনা দিয়েছে। তা অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ