উইকেটে এলেন ৩০তম ওভারে। মানে ওভার বাকি এখনো ২০টি। চাইলে ধরেও খেলতে পারতেন। ঝড় তোলার জন্য শেষের ওভারগুলোর জন্য অপেক্ষা করতেই পারতেন। কিন্তু প্রথাগত ওয়ানডে ইনিংস আপনার পছন্দ নয়। আপনি উইকেটে এসেই বেধড়ক মার দিয়ে উল্টো বোলারকে রাখলেন চাপে। মুহূর্তে খেলার চেহারা বদলে দিলেন। এটা যদি করতে পারেন, তাহলে আপনি একজন গেম চেঞ্জার।

এ তো গেল ব্যাটসম্যানের কথা। বোলাররাও এটা করতে পারেন। সে জন্য অবশ্যই তাঁকে নিতে হবে উইকেট। ফিল্ডাররা আর বাদ যাবেন কেন! একটা ক্যাচ খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে, এমন ঘটনা নেই নাকি!

বলে রাখা ভালো, এসব কোনো কিছু না করেও কেউ তাঁর দলকে জেতাতে পারেন। ওপেনিংয়ে নেমে ধরে খেলে শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ারও বাড়তি একটা মহিমা আছে। আবার কিপটে বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানকে চাপে রেখে সাফল্যর ঘটনাও অহরহ। তবে দিনে দিনে ‘হঠাৎ খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া’ ক্রিকেটারদের কদর একটু বেশিই বেড়ে চলছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও প্রতিটি দলে আছেন এ ধরনের ক্রিকেটার। যে দলে বেশি বেশি এ ধরনের ক্রিকেটার থাকবে, লড়াইয়ে তারাই থাকবে এগিয়ে।

ভারতের শ্রেয়াস আইয়ারের কথা ধরুন। আইয়ারের নাম শুনে চমকে উঠতে পারেন। এত নাম রেখে আইয়ার কেন? কিছু ক্রিকেটার এমন থাকে, যাঁদের প্রতিদিন নিজেদের প্রমাণ করতে হয়। আইয়ার সেই দলের। সে কারণেই নামটা নিয়ে একটু খটকা লাগতে পারে। তবে ভারতের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আগাগোড়া একজন গেম চেঞ্জার।

সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ দিয়েই বোঝানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। এ মাসের শুরুতেই নাগপুরে ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে ফিরে যান। ২৪৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ভারতের ১৯ রানে ২ উইকেট নেই। সেখানে এসে চাইলেই তো ধরে ধরে খেলতে পারতেন। খেলেননি। করেছেন ৩৬ বলে ৫৯ রান।

ঘরের মাঠে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে এই আইয়ার কিন্তু ১১৩ স্ট্রাইক রেটে ৫৩০ রান করেছিলেন। এই পারফরম্যান্সও অবশ্য তাঁকে বেশি দিন আলোচনায় রাখতে পারেনি। ওই যে আগেই বলা হলো—প্রতিদিন প্রমাণ করতে হওয়াদের দলে আইয়ার। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও কি সেই প্রমাণের মঞ্চ হয়ে উঠবে?

ভারতের যদি আইয়ার হন, পাকিস্তানের এমন কে আছেন? খুব বেশি নেই। দলটি এখনো প্রথাগত ওয়ানডেই খেলে। মানে ব্যাটসম্যানরা শুরুতে সময় নিয়ে বুঝেশুনে হাত খোলেন। তবে তাঁদের মধ্যে একজনই ব্যতিক্রম। তিনি ফখর জামান।

খেলার চেহারা বদলে দিতে পারেন ফখর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য টসম য ন আইয় র উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির