Risingbd:
2025-08-01@04:40:51 GMT

ম্যানসিটিকে একাই ধসালেন এমবাপে

Published: 20th, February 2025 GMT

ম্যানসিটিকে একাই ধসালেন এমবাপে

কিলিয়ান এমবাপে ধীরে-ধীরে চ্যাম্পিয়নস লিগের রোমাঞ্চ উপভোগ করা শুরু করেছেন। রিয়াল মাদ্রিদে আসার আগে স্বদেশী ক্লাব মোনাকো আর পিএসজির জার্সিতেও তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগে বহু গোল করেছেন। তবে এই আসরটিতে রিয়াল ঐতিহ্যগতভাবে যেভাবে মহারণগুলো জিতে, সেখানে গোল পেলে রোমাঞ্চের শিহরণ সবাই অনুভব করবে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তেমনই এক মহারণ একাই জেতালেন এমবাপে।

এমবাপের হ্যাটট্রিকে ম্যানসিটিকে ৩-১ ব্যবধানে হেসেখেলে হারিয়েছে রিয়াল। লস ব্ল্যাঙ্কসদের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি তার প্রথম হ্যাটট্রিক। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে থেকে শেষ ষোলোতে নাম লেখাল রিয়াল। শেষ ষোলোতে রিয়ালের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদ অথবা বায়ার লেভারকুসেন।

প্রতিপক্ষের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আর্লিং হালান্ড এবং কেভিন ডি ব্রুইনাকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান সিটি বস পেপ গার্দিওলা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে জাল খুঁজে নেওয়া এমবাপে রিয়ালকে চালকের আসনে বসিয়ে ফেলেন ৩৩তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। ৬১তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার।

আরো পড়ুন:

দিস ইজ নট ফুটবল, দিস ইজ লা লিগা! 

‘স্টপ ক্রায়িং ইউর হার্ট আউট’ তাঁতিয়ে দিয়েছিল ভিনিসিয়ুসকে

যোগকরা সময়ে ব্যবধান কমান নিকোলাস গোঞ্জালেজ। ওমর মারমুশের ফ্রি-কিক ক্রসবার লেগে ফিরে আসলে বল পেয়ে যান তিনি। ফাঁকা জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

এমবাপেকে বহুদিন ধরেই তার শৈশবের আইডল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সাথে। এই পর্তুগিজ তারকা আবার রিয়ালের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাও। ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী এই মহাতারকাকে দেখেই এমবাপে রিয়ালের জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন শৈশবে। ক্যারিয়ার শুরুতেই বিশ্বকাপ জেতা এই ফরোয়ার্ডকে বহুদিন থেকেই তাই তুলনা করা হতো রোনালদোর সঙ্গে।

ম্যানসিটির বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকের পর সাংবাদিকরা আবারও সেই প্রসঙ্গ উঠালে রিয়াললের ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তিও মানলেন, রোনালদোর উচ্চতা ছোঁয়ার সম্ভাবনা তিনি দেখেন এমবাপের মধ্যে। তবে কাজটা যে ভীষণ কঠিন, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন আনচেলত্তি, “ক্রিস্তিয়ানোর পরিসংখ্যানে পৌঁছানোর মান তার (এমবাপে) আছে। তবে তাকে কাজ করে যেতে হবে। কারণ ক্রিস্তিয়ানো মানদণ্ড অনেক উঁচুতে তুলে রেখেছে। তবে এই ক্লাবে খেলা নিয়ে কিলিয়ান এত রোমাঞ্চিত… সে অবশ্যই ক্রিস্তিয়ানের পর্যায়ে যেতে পারে। কাজটা যদিও সহজ হবে না, পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে ওকে।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ ন এমব প

এছাড়াও পড়ুন:

অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক

নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।

ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।

প্রতিবাদ, বিক্ষোভ

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।

‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।

পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।

দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।

সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।

সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।

কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ