কিলিয়ান এমবাপে ধীরে-ধীরে চ্যাম্পিয়নস লিগের রোমাঞ্চ উপভোগ করা শুরু করেছেন। রিয়াল মাদ্রিদে আসার আগে স্বদেশী ক্লাব মোনাকো আর পিএসজির জার্সিতেও তিনি চ্যাম্পিয়নস লিগে বহু গোল করেছেন। তবে এই আসরটিতে রিয়াল ঐতিহ্যগতভাবে যেভাবে মহারণগুলো জিতে, সেখানে গোল পেলে রোমাঞ্চের শিহরণ সবাই অনুভব করবে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) রাতে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তেমনই এক মহারণ একাই জেতালেন এমবাপে।
এমবাপের হ্যাটট্রিকে ম্যানসিটিকে ৩-১ ব্যবধানে হেসেখেলে হারিয়েছে রিয়াল। লস ব্ল্যাঙ্কসদের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি তার প্রথম হ্যাটট্রিক। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে থেকে শেষ ষোলোতে নাম লেখাল রিয়াল। শেষ ষোলোতে রিয়ালের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদ অথবা বায়ার লেভারকুসেন।
প্রতিপক্ষের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আর্লিং হালান্ড এবং কেভিন ডি ব্রুইনাকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান সিটি বস পেপ গার্দিওলা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে জাল খুঁজে নেওয়া এমবাপে রিয়ালকে চালকের আসনে বসিয়ে ফেলেন ৩৩তম মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। ৬১তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার।
আরো পড়ুন:
দিস ইজ নট ফুটবল, দিস ইজ লা লিগা!
‘স্টপ ক্রায়িং ইউর হার্ট আউট’ তাঁতিয়ে দিয়েছিল ভিনিসিয়ুসকে
যোগকরা সময়ে ব্যবধান কমান নিকোলাস গোঞ্জালেজ। ওমর মারমুশের ফ্রি-কিক ক্রসবার লেগে ফিরে আসলে বল পেয়ে যান তিনি। ফাঁকা জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
এমবাপেকে বহুদিন ধরেই তার শৈশবের আইডল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সাথে। এই পর্তুগিজ তারকা আবার রিয়ালের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাও। ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী এই মহাতারকাকে দেখেই এমবাপে রিয়ালের জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন শৈশবে। ক্যারিয়ার শুরুতেই বিশ্বকাপ জেতা এই ফরোয়ার্ডকে বহুদিন থেকেই তাই তুলনা করা হতো রোনালদোর সঙ্গে।
ম্যানসিটির বিপক্ষে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকের পর সাংবাদিকরা আবারও সেই প্রসঙ্গ উঠালে রিয়াললের ম্যানেজার কার্লো আনচেলত্তিও মানলেন, রোনালদোর উচ্চতা ছোঁয়ার সম্ভাবনা তিনি দেখেন এমবাপের মধ্যে। তবে কাজটা যে ভীষণ কঠিন, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন আনচেলত্তি, “ক্রিস্তিয়ানোর পরিসংখ্যানে পৌঁছানোর মান তার (এমবাপে) আছে। তবে তাকে কাজ করে যেতে হবে। কারণ ক্রিস্তিয়ানো মানদণ্ড অনেক উঁচুতে তুলে রেখেছে। তবে এই ক্লাবে খেলা নিয়ে কিলিয়ান এত রোমাঞ্চিত… সে অবশ্যই ক্রিস্তিয়ানের পর্যায়ে যেতে পারে। কাজটা যদিও সহজ হবে না, পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে ওকে।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ ন এমব প
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।