জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আইভাসে একদিনে ১ হাজার ৭২৩টি নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন হয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদক শ্রেণীতে ৪৬টি, সেবাগ্রহীতা ৮৬২টি, খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা ৫০০টি, আমদানিকারক ২৯টি, রপ্তানিকারক ৯টি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৭৭টি । 

এটি বর্তমান সরকারের সময় নতুন রেকর্ড। এনবিআর’র বর্তমান চেয়ারম্যান প্রতিদিনের নিবন্ধন মনিটর করছেন। মাঠপর্যায়ের সকল ভ্যাট কমিশনার একযোগে নতুন করদাতা খুঁজে বের করে প্রতিযোগিতামূলক ভ্যাট দাতা শনাক্ত করছেন। 

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.

আল-আমিন শেখ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বুধবার সারা দেশে একদিনে চট্টগ্রাম কমিশনারেট ৫৭৯ জন, ঢাকা (উত্তর) কমিশনারেট ১৮০ জন, ঢাকা (পশ্চিম) কমিশনারেট ২৬৬ জন, খুলনা কমিশনারেট ১৯৫ জন, রাজশাহী কমিশনারেট ৫০ জন, যশোর কমিশনারেট ৪৭ জন, রংপুর কমিশনারেট ৪১ জন, কুমিল্লা কমিশনারেট ২৭ জন, ঢাকা (দক্ষিণ) কমিশনারেট ৭১ জনসহ মোট ১৭২৩ জন ব্যবসায়ী নতুন নিবন্ধন গ্রহণ করেছে। ভ্যাট আদায় বৃদ্ধি ও করজাল বিস্তৃতিতে দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের কর্মকর্তারা দৈনিক কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত সময়েও কাজ করছে।

রাজস্ব আদায়ে সরকারের নতুন নীতি ও দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে পূর্ব থেকেই সক্রিয়ভাবে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কর জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, কর আদায় সন্তোষজনক ও করজাল বিস্তৃতি সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে যুগপৎ কাজ করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানের নানামুখী ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে। ভ্যাটের রাজস্ব ও আওতা বৃদ্ধির জন্যে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে থেকে বাস্তবায়ন অনুবিভাগের অধীন মাঠের কমিশনারদের বেশ কিছু নতুন নির্দেশনা প্রদান করেছে।

ইতোপূর্বে, ফেব্রুয়ারি মাসকে কমিশনারদের জন্য নিবন্ধনের মাস হিসেবে ঘোষণা দেয় এনবিআর। সে লক্ষ্যে নতুন ভ্যাট নিবন্ধন বৃদ্ধির জন্য গতকাল সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম এবং জেনেক্সের প্রতিনিধি ও ভ্যাট বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত, সংযোগ, সমন্বয় রক্ষার জন্য দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। একইভাবে তিনি মাঠ পর্যায়ের কমিশনারদেরও সম্পৃক্ত করেন। ফলে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন দেওয়া সম্ভব হয়েছে। 

উল্লেখ্য, যে কোনো ব্যবসায়ীর বার্ষিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকার অধিক হলেই তাকে ভ্যাট নিবন্ধন নিতে হবে।

ঢাকা/এনএফ/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ব যবস একদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ