বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা নহে; জাতিসত্তা রক্ষার আন্দোলনেও অমর দিবসরূপে দেদীপ্যমান। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বুকের তাজা রক্ত ঢালিয়া দিয়া ভাষাশহীদগণ কেবল দেশপ্রেমের অনন্য উদাহরণই সৃষ্টি করেন নাই; দিবসটি বাংলা ছাপাইয়া সকল ভাষার মর্যাদার স্মারক হইয়া উঠিয়াছে। একুশের চেতনা দেশ-কাল-পাত্রভেদে অধিকার আদায়ে প্রেরণার উৎসরূপে ক্রিয়াশীল। আমরা দেখিয়াছি, অধিকার আদায়ে বাঙালি ভাষা আন্দোলনের যেই সংগ্রাম রচনা করিয়াছিল, সেই পথপরিক্রমায়ই সূচিত হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। অকুতোভয় বাঙালি জনগোষ্ঠী এই ভূখণ্ডের অপরাপর জাতিগোষ্ঠীকে লইয়া দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অর্জন করে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পরও যুগ যুগ ধরিয়া আন্দোলনের প্রেরণা হইয়া রহিয়াছে ভাষা আন্দোলন। এমনকি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানও উহার বাহিরে নহে। বায়ান্নতে ছাত্র-জনতা মুখের ভাষা রক্ষায় সোচ্চার হইয়া আন্দোলনে ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও তাহারা প্রেরণা হইয়া উঠিয়াছিল। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে দেয়ালে দেয়ালে মায়ের ভাষায় লিখিত গ্রাফিতি মানুষকে উজ্জীবিত করিয়াছিল। মাতৃভাষায় উচ্চারিত স্লোগান যে কতটা শক্তিশালী হইয়া উঠিতে পারে; যুগে যুগ দাবি আদায়ের আন্দোলনে উহা প্রমাণিত। যেই কারণে ঐতিহাসিক দিবসটি সাত দশক অতিক্রম করিলেও উহার চেতনা চিরঅমলিন।
আমাদের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রধান দুইটি দাবি ছিল– রাষ্ট্রভাষা বাংলা এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন। ১৯৫৪ সালেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তৎকালীন পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃতির মাধ্যমে প্রথম দাবি পূরণ হইলেও দ্বিতীয় দাবিটি এখনও প্রত্যাশিত মাত্রায় পূরণ হয় নাই। সর্বত্র বাংলা প্রচলনের প্রশ্নটা আমরা ফি বৎসরই করিয়া আসিতেছি। কিন্তু রাষ্ট্রের প্রতিটা পর্যায়ে, প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাদের মাতৃভাষার প্রচলন কতটা হইয়াছে? যেই জাতির মানুষ ভাষার তরে জীবন দিয়াছে, সেই জাতির কোটি কোটি মানুষের পড়িতে ও লিখিতে না পারিবার বিষয় বেদনাদায়কই বটে। একই সঙ্গে মাতৃভাষা এখনও আমাদের সর্বত্র শিক্ষার বাহন হইয়া উঠিতে পারে নাই। উচ্চশিক্ষার পুস্তকসহ অনেক বিষয় আমরা এখনও বাংলায় করিতে পারি নাই। মাতৃভাষারূপে বাংলার দাপ্তরিক ব্যবহার বৃদ্ধি পাইয়াছে সত্য, কিন্তু আদালতের কর্মকাণ্ড এখনও ইংরাজিনির্ভর।
তবে ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঘোষণায় বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার ভাবমূর্তিই কেবল উজ্জ্বল হয়নি, একই সঙ্গে বিশ্বের সব মাতৃভাষাই বিশেষ মর্যাদা ও মনোযোগ লাভ করিয়াছে। জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষারূপে বাংলাও আবির্ভূত হউক। আমরা বিশ্বাস করি, সকলের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করিবার বিষয়ও একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা। অমর একুশে আমাদের জাতিসত্তা রক্ষার আন্দোলনরূপেও দেখিয়া আসিয়াছি। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইহা প্রেরণার বাতিঘরস্বরূপ ক্রিয়াশীল। তজ্জন্য দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটেও পথ দেখাইতে পারে একুশের চেতনা।
 আমরা জানি, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমাদের চ্যালেঞ্জ দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ। তজ্জন্য অবাধ-সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করিয়াছেন। এখন প্রয়োজন নির্বাচন ও অন্যান্য সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য। বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐকমত্য জরুরি।
 আমরা প্রত্যাশা করিব, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে দেশবাসী বায়ান্ন সালের ন্যায় দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হইবে। আমরা জানি, একুশে ফেব্রুয়ারি মানে বহুপাক্ষিকতা ও সকলের যথাযোগ্য মর্যাদার প্রশ্ন। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যেই পথ আমাদের সম্মুখে উন্মুক্ত, উহা সকলের জন্য অবারিত হউক। 
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন আম দ র কর য় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কেন এমন দুর্বোধ্য পথ
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ রাজনীতিতে অনৈক্য ও বিভক্তি বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের সুপারিশ নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক সামনে এসেছে। সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে ইচ্ছাকৃতভাবে একটি জটিল পথ বেছে নেওয়া হয়েছে কি না, সে প্রশ্নও এসেছে।
৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর জুলাই সনদ প্রণয়ন এবং অধিকাংশ দলের স্বাক্ষর সত্ত্বেও কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত সনদের সঙ্গে বাস্তবায়নের সুপারিশের অসামঞ্জস্য লক্ষণীয়।
ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য দুটি বিকল্প প্রস্তাব সুপারিশ করেছে। দুটোই গণভোট-নির্ভর। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে ভোটারদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তাঁরা কি ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ ২০২৫’ এবং এর প্রথম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কারের খসড়া বিল অনুমোদন করেন? আর দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভোটারদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তাঁরা কি ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ ২০২৫’ এবং এর প্রথম তফসিলে উল্লেখিত প্রস্তাবসমূহ অনুমোদন করেন?
একটিতে প্রস্তাব, অন্যটিতে বিল অনুমোদনের প্রশ্ন। প্রথম প্রস্তাব অনুযায়ী, সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে সংসদ ২৭০ দিনের মধ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের কাজ শেষ করতে না পারলে প্রদত্ত বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে। তবে দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করা হবে। না হলে কী হবে, তা উল্লেখ নেই।
জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) উল্লেখ থাকলেও ঐকমত্য কমিশন দুটি প্রস্তাবেই নোট অব ডিসেন্ট না রাখার সুপারিশ করেছে। জুলাই সনদে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব আছে। ৬১টিতে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাবের একাধিক ধাপ থাকায় বিভিন্ন ধাপসহ নোট অব ডিসেন্টের সংখ্যা শতাধিক।
দুর্বোধ্য, জটিল পথ
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত দুটি বিকল্পই নানামুখী জটিলতার জন্ম দিতে সক্ষম। কমিশনের সুপারিশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যেমন নোট অব ডিসেন্ট পুনর্বিবেচনা করা যাবে কি না? উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিও কি পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকবে? গণভোট যদি প্রত্যাখ্যাত হয়, তাহলে কী হবে? অস্পষ্টতা এবং জটিল প্রক্রিয়া রাজনৈতিক সংকটের জন্ম দিতে পারে।
সুপারিশকৃত স্বয়ংক্রিয় সাংবিধানিক সংশোধনী ব্যবস্থাটি একটি মারাত্মক হুমকি। বিশ্বের কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই সংবিধান সংশোধনের জন্য এমন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা নেই। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, কানাডা, জার্মানিসহ সব স্থিতিশীল গণতন্ত্রে সংবিধান সংশোধনে সংসদ বা কংগ্রেসের স্পষ্ট ভোট ও সমর্থন আবশ্যক। সুপারিশটি গৃহীত হলে বিপজ্জনক নজির স্থাপন করবে। এই বিধান সংসদীয় সার্বভৌমত্বের মৃত্যু ঘটাবে। এই প্রস্তাব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি অবহেলারও বহিঃপ্রকাশ। এটি একটি যান্ত্রিক প্রক্রিয়া। গুণগত মানের চেয়ে সময়সীমা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। সংসদ সদস্যরা সময়ের চাপে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয়ে যথাযথ বিবেচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন। ধরা যাক, সংসদ সদস্যরা খসড়া বিলের কিছু ধারা নিয়ে গভীরভাবে দ্বিমত পোষণ করছেন এবং তা সমাধান না করেই ২৭০ দিন পার হয়ে গেল।
সে ক্ষেত্রে একটি অগ্রহণযোগ্য ও অসম্পূর্ণ খসড়া বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এই বিধান গুরুতর সাংবিধানিক সংকট ও রাষ্ট্রযন্ত্রে অচলাবস্থাও সৃষ্টি করতে পারে। কোনো খসড়া বিল ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ সংবিধানে রূপ নিলে, প্রশ্ন উঠবে—এ প্রক্রিয়া নিজেই কি সংবিধানসম্মত? আদালতকে বলা হবে, সংবিধান পরিবর্তনের নিয়ম এভাবে পাশ কাটানো যায় কি না। ফলে একের পর এক রিট, স্থগিতাদেশ ও মামলার জট তৈরি হতে পারে। আদেশ সংবিধানের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে রাষ্ট্র পরিচালনাও স্থবির হয়ে পড়বে। স্বয়ংক্রিয় বিধান কার্যকর হলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর জন্য দায়ী থাকবে না।
সংসদ বলবে, ‘সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি, বিল নিজে থেকেই কার্যকর হয়েছে।’ সরকার বলবে, ‘এটি আইন অনুযায়ী হয়েছে।’ সুশাসনের পরিপন্থী এই গলদ কাঠামোর জন্য কেউ জবাবদিহি করবে না।
১৯৭৭, ১৯৮৫ ও ১৯৯১ সালের গণভোটের জনসাধারণের বোধগম্য ও সরল প্রশ্নের তুলনায় প্রস্তাবিত প্রশ্ন দুটি অত্যন্ত জটিল। উভয় বিকল্পতেই গণভোটে ৪৮টি সাংবিধানিক ইস্যুর একটি প্যাকেজের অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি পুনর্বিবেচনা, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন এবং বিরোধী দলকে শক্তিশালীকরণের মতো মৌলিক পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত। সব নাগরিককে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয়, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ এবং প্রধানমন্ত্রীকে দলীয় প্রধান পদে একই সঙ্গে রাখা নিষিদ্ধ করার মতো প্রস্তাবও এতে রয়েছে।
এই গুচ্ছকরণের ফলে ভোটারকে পুরো প্যাকেজটিকে সম্মতি দান বা প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যদি কেউ কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাব সমর্থন করেন, কিন্তু অন্যগুলোর বিরোধিতা করেন, তাহলে তাঁর পক্ষে স্পষ্ট ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেওয়া দুরূহ।
১৯৯১ সালের গণভোট ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মাত্র ৩৫ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। সুপারিশকৃত গণভোটের প্রশ্নের ভাষা ভোটারদের কম উপস্থিতির কিংবা বিভ্রান্তির বা ভুল সিদ্ধান্তের কারণ হতে পারে।
নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী হবে—এ প্রশ্ন আরও জটিলতা তৈরি করেছে। কমিশনের দুটি সুপারিশেই নোট অব ডিসেন্ট অন্তর্ভুক্ত করেনি। উভয় প্রস্তাবই আগামী সংসদকে সংবিধান পরিবর্তনের জন্য সরল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছে। সংবিধান সংশোধনের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিধানে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে সরল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া দল নিজের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করার সুযোগ পাবে।
গণভোট কবে হবে এবং আদেশ কে জারি করবে, এ সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে বলেছে কমিশন।
গণতান্ত্রিকতার মাধ্যমে সহজ সমাধান
কমিশনের সুপারিশকৃত দুর্বোধ্য গলিপথ থেকে বেরিয়ে সরল, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করা যেতে পারে। সামনের দিকে অগ্রসর হতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সাহস, সততা ও ক্ষমতা হস্তান্তরের সদিচ্ছা প্রদর্শন জরুরি।
এ ক্ষেত্রে সম্মতির বিষয়বস্তু নিয়ে সরল গণভোট ও আপত্তির বিষয়গুলো সংসদে আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির সমন্বিত পদ্ধতি কার্যকর সমাধান হতে পারে। অর্থাৎ জনগণ গণভোটের মাধ্যমে গাঠনিক ক্ষমতা (কনস্টিটুয়েন্ট পাওয়ার) বা সংবিধান তৈরি বা পুনর্গঠন করার অধিকার প্রদান করবে। ‘বেসিক স্ট্রাকচার’ ডকট্রিনের প্রয়োজনীয়তা প্রতিপালিত হবে।
জটিলতা সৃষ্টি করে সময় নষ্ট করার অর্থ হলো অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও গভীরতর করা। সহজ, সরল ও গণতান্ত্রিক পন্থাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার ঐক্যের বাংলাদেশ নিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ।
টালবাহানা নয়, সাংবিধানিক সংস্কারের নিমিত্তে গাঠনিক ক্ষমতার প্রয়োগের জন্য গণভোট ও নির্বাচনই সহজ পথ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ ঘোষিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর।
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চেয়ারপারসন, উন্নয়ন অন্বেষণ।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)