দিনাজপুরে ৮ সহস্রাধিক ডাকটিকিট নিয়ে প্রদর্শনী, দর্শনার্থীদের ভিড়
Published: 21st, February 2025 GMT
১৯৪৭ সালে বাংলাভাগের পর ভাষা প্রশ্নে পল্লিকবি জসীমউদ্দীনসহ কয়েকজন বলেছিলেন পাকিস্তানের ভাষা হবে বাংলা। এ বিষয়ে তাঁরা খবরের কাগজে বিবৃতিও দিয়েছিলেন। একপর্যায়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। বায়ান্নর সেই আন্দোলন একাত্তরের স্বাধীনতাসংগ্রামেও প্রেরণা জুগিয়েছে। বাংলা ভাষা প্রাপ্তির স্বীকৃতিতে অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে জসীমউদ্দীন্সহ কয়েকজনকে নিয়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ছবিসংবলিত ওই ডাকটিকিট দেখিয়ে এসব কথা বলছিলেন উদয় শংকর বিশ্বাস। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক এবং বরেন্দ্র ফিলাটেলক সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকটিকিট সংগ্রাহক। দিনাজপুরে প্রথমবারের মতো স্মারক ডাকটিকিট প্রদর্শনী ও বিক্রয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ডাক বিভাগ ও বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটি এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুরের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল রশিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এনামউল্যা, সহ–উপাচার্য শফিকুল ইসলাম সিকদার, ডাক অধিদপ্তরের পরিচালক (স্ট্যাম্পস) মামুনুর রশিদ, বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক উদয় শংকর বিশ্বাস, রাজশাহীর অতিরিক্ত পোস্টমাস্টার জেনারেল জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, ডাকটিকিট দেখতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রায় আট সহস্রাধিক ডাকটিকিট, পোস্টকার্ড, স্যুভেনির, বিশেষ খাম, উদ্বোধনী খাম প্রদর্শন করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাযুদ্ধ বিষয়াবলির পাশাপাশি বাংলাদেশের ফুল, পশুপাখি, মাছ, লোকসংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন উৎসব, পোশাক, অলিম্পিকসহ বিভিন্ন খেলাধুলা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ, সমাজ সংস্কারে অবদান রাখা বিশেষভাবে স্বীকৃত ব্যক্তির ছবিসংবলিত ডাকটিকিট রয়েছে। বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে উদ্বোধনী খাম, বিশেষ খাম, বিভিন্ন স্মারক ডাকটিকিট ও পোস্টকার্ড। কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত, কেউ আবার বিভিন্ন ডাকটিকিট বিষয়ে জানতে আয়োজকদের নানা প্রশ্ন করছেন।
আয়োজকদের একজন ডাক বিভাগের নকশাকারক সুমন্ত কুমার জানান, ২০২১ সালে বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন কয়েকজন ডাকটিকিট সংগ্রাহক। বর্তমানে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা অর্ধশত। যাঁদের প্রত্যেকের সংগ্রহে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ডাকটিকিট রয়েছে। এরই মধ্যে দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে এ ধরনের প্রদর্শনী করা হয়েছে।
ডাকটিকিট নিয়ে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির একজন সদস্য। আজ শুক্রবার সকালে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এমন সময় এ খবর সামনে এসেছে, যখন ইরানে চালানো হামলার প্রথম দিনই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।
মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না। যতক্ষণ না তারা তা করছে, ততক্ষণ আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পেছনে লাগার বিষয়ে, এমনকি আলাপও করছি না।’
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ফক্স নিউজকে বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’
ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’
নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।