Samakal:
2025-09-18@03:09:31 GMT

গরিবের ভরসা ইমপ্যাক্ট জীবনতরী

Published: 22nd, February 2025 GMT

গরিবের ভরসা ইমপ্যাক্ট জীবনতরী

রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদ ফকির। সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালান। চোখের সমস্যার কারণে ভালোভাবে কাজ করতে পারছিলেন না। অর্থাভাবে যেতে পারছিলেন না চিকিৎসকের কাছেও। সম্প্রতি জীবনতরী ভাসমান হাসপাতালের কথা জানতে পারেন। সেখানে গিয়ে খুব কম খরচে চিকিৎসা করিয়ে এখন তিনি ঠিকঠাক চোখে দেখতে পারছেন। 
এভাবেই নদীতীরবর্তী আর দুর্গম এলাকার মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে চলেছে ‘ইমপ্যাক্ট জীবনতরী ভাসমান হাসপাতাল’। হাসপাতালটি এখন রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাটে অবস্থান করছে। এ হাসপাতালে অত্যন্ত কম খরচে চিকিৎসাসেবা পেয়ে খুশি এলাকার মানুষ। 
মাহমুদ ফকির জানান, তাঁর চোখের সমস্যার কারণে অনেক দিন ধরে ঠিকমতো কাজ করতে পারছিলেন না। তাঁর ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। মাথাব্যথার কারণে তাঁর ছেলের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছিল। বাবা-ছেলে দু’জনই জীবনতরী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। টিকিট, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সব মিলিয়ে দু’জনের খরচ হয়েছে মাত্র তিনশ টাকা। এত কম খরচে ভালো চিকিৎসা পেয়ে খুশি তিনি। 
জীবনতরী হাসপাতাল সূত্র জানায়, ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে জীবনতরী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৫ বছরে দেশের প্রায় ৫০টি জেলা ভ্রমণ করেছে হাসপতালটি। মূলত প্রান্তিক বা পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর সেবা দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য। মাত্র ৫০ টাকা টিকিট কেটে যে কেউ চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন। হাসপাতালটিতে স্বল্পমূল্যে চক্ষু রোগের চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন, রোগীর চাহিদা অনুযায়ী লেন্স সংযোজন ও ফ্যাকো সার্জারি, নাক-কান-গলা রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়। এছাড়া জন্মগত বাঁকা-পা, ঠোঁট কাটা ও তালুকাটা রোগের অপারেশন, অর্থপেডিক সমস্যাজনিত শারীরিক ব্যথা, মাজাব্যথা, মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়। তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চারজন নার্সসহ মোট ৩২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতালটিতে কর্মরত। শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ছয় দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেওয়া হয় চিকিৎসাসেবা। গত ১ জানুয়ারি থেকে রাজবাড়ীতে অবস্থান করছে হাসপাতালটি। মার্চ মাসজুড়ে বা এর চেয়ে বেশি দিন এটি এখানে থাকছে বলে জানা গেছে।
গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সোনাকান্দর মৌলভীঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, নোঙর করে রাখা হয়েছে আকাশি-সাদা রঙের তিনতলা হাসপাতালটি। নদীতীর থেকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বালুর বস্তা ও বাঁশের মাচা দিয়ে রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। রোগীরা যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। নদীর পারে রয়েছে টিকিট কাউন্টার। এ সময় কথা হয় ধুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা শাহেদা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন। চোখে কম দেখেন। কোরআন তেলাওয়াত করতে অসুবিধা হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। এখানে কমমূল্যে চিকিৎসার কথা শুনে এসেছেন। ৫০ টাকা টিকিট কেটে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। খুব যত্ন নিয়ে তাঁর চোখ দেখেছেন তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছেন। এখানে চিকিৎসা পেয়ে সন্তুষ্ট তিনি। 
স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম, রাকিবুল হোসেনসহ অনেকেই জানান, দুর্গম চরের মানুষ সব সময় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। জীবনতরী হাসপাতাল তাদের এলাকাতে আসায় মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। যতদিন থাকবে ততদিন তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের কাছে শুনেছেন হাসপাতালটিতে ভালো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। 
জীবনতরী হাসপাতালের প্রশাসক চিকিৎসক একেএম সহিদুল হক বলেন, হাসপাতালটিতে দিনে গড়ে ৭০–৮০ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। মূলত মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্যই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে অত্যন্ত কম মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়ে থাকে। মাত্র চার হাজার টাকায় জটিল সব অপারেশন করা হচ্ছে। নদ-নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ বেশির ভাগই তুলনামূলক দরিদ্র হয়। তাদের পক্ষে বেশি টাকা খরচ করে শহরে গিয়ে আধুনিক চিকিৎসা নেওয়া কঠিন। তাই তাদের সুবিধার্থে ২৫ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। যে এলাকায় যান সেখানে সাধারণত দুই থেকে ছয় মাস অবস্থান করে তারা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। রাজবাড়ীতে তিন মাস বা তারও বেশি সময় অবস্থান করতে পারেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

আঠারো শতকের সুফি কবি ও সংগীতজ্ঞ সৈয়দ খাজা মীর দর্দ

আবদালি মারাঠিদের উৎপাত ও অত্যাচারে অন্য কবিরা যখন একে একে দিল্লি ছেড়ে লক্ষ্ণৌ চলে গিয়েছিলেন, তখনো প্রিয় শহর দিল্লি ছাড়েননি সৈয়দ খাজা মীর দর্দ (১৭২০-১৭৮৪ খ্রি.), বরং আমৃত্যু সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন। লক্ষ্ণৌয়ে অবস্থানকারী কবিদের কাব্যবৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তাঁর কবিতার যে পার্থক্য ছিল, শুধু সে কারণেই তিনি সেই জায়গায় যাননি তা নয়, তাঁর আত্মমর্যাদাবোধ ছিল প্রখর, কারও তারিফ করে কখনো কসিদা লিখেছেন বলে শোনা যায়নি, সর্বোপরি তাঁর জীবনদর্শনও ছিল সমকালিক অন্য কবিদের থেকে আলাদা। মধ্যযুগের যে সময়টায় মীর দর্দের জন্ম, সেই সময় উর্দু সাহিত্যে ‘মীর-সওদার যুগ’ বলে পরিচিত—এই দুই কবি পারস্য কবি খাজা শামসুদ্দিন হাফিজ সিরাজি ও শেখ মোসলেহ উদ্দিন সাদির পথ অনুসরণ করে ফারসি কবিতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে উর্দু কবিতার ধারায় যুক্ত করেন এবং সফল হন। মির্জা রফী সওদার চেয়েও সাত বছরের অগ্রজ মীর দর্দ এই সবকিছুই নিবিড়ভাবে লক্ষ করেছেন, পারস্য ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ ভান্ডার থেকে অনেক কিছু গ্রহণও করেছেন, তবু আমাদের ধারণা, পারিবারিক বংশধারার প্রভাবেই তাঁর জীবনদর্শন ও কাব্যচিন্তা শুরু থেকেই ভিন্ন ছিল।

মধ্যযুগের যে সময়টায় মীর দর্দের জন্ম, সেই সময় উর্দু সাহিত্যে ‘মীর-সওদার যুগ’ বলে পরিচিত—এই দুই কবি পারস্য কবি খাজা শামসুদ্দিন হাফিজ সিরাজি ও শেখ মোসলেহ উদ্দিন সাদির পথ অনুসরণ করে ফারসি কবিতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে উর্দু কবিতার ধারায় যুক্ত করেন এবং সফল হন।

মাহমুদ আলী খান জামী তাঁর ‘দর্দ কে সো শের’ (প্রকাশকাল: ১৯৫৫ খ্রি., দিল্লি) গ্রন্থে লিখেছেন, খাজা মীর দর্দের দাদা বাদশাহ আলমগীরের শাসনামলে বুখারা থেকে এ দেশে এসেছিলেন, আর বাবা খাজা মাহমুদ নাসির আন্দালিব ছিলেন ‘শায়েরে উর্দু’ এবং ব্যক্তিগত জীবনে একজন সুফি। ভিন্ন মতে, তাঁর বাবার নাম (মাহমুদ নাসির নয়) মুহাম্মদ, আর তিনি উর্দু ভাষার কবি ছিলেন না, ছিলেন ফারসি ভাষার কবি। এঁরা ছিলেন নকশবন্দী ঘরানার পথিকৃৎ খাজা বাহাউদ্দিনের বংশধর ও অনুসারী। সুফি পরম্পরার মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন বলেই মাত্র বাইশ বছর—ভিন্ন মতে, সাতাশ বছর বয়সে জাগতিক মোহ ত্যাগ করে সুফি শুদ্ধাচারী হয়ে ওঠেন দর্দ এবং সুফি তত্ত্বসংক্রান্ত একাধিক বই লেখেন। ফলে তিনি যখন শের ও গজল লেখেন, তখন সেগুলোতে স্বভাবগত কারণেই সুফি মরমি কবিতার সহজগভীর ভাবের ছায়া পড়েছে। নিচে দর্দ কে সো শের বই থেকে—অন্যত্র গজলরূপে গণ্য এবং গীত—প্রথম ৩টি শের পড়লে এ কথার সত্যতা মিলতে পারে :

তোহমতে চন্দ অপনে জিম্মে ধর চলে
জিস লিয়ে আয়ে থে হম সো কর চলে
জিন্দেগি হ্যয় য়া কোই তোফান হ্যয়
হম তো ইস জিনে কে হাথোঁ মে মর চলে
শমা কে মানিন্দ হম ইস বজম মে
চশম নম আয়ে থে দামন তর চলে

অর্থাৎ :

কত অপবাদ বয়ে নিয়ে আমি চলছি
অথচ যে কারণে এসেছি তা–ই করে গেছি
এ কোনো জীবন, নাকি তুফান
তার হাতেই তো আমি মারা যাব
এই সভার প্রদীপ ছিলাম আমি
এখন আমার চোখের জলে আঁচল ভিজে যায়

[অনুবাদ: লেখক]

অল্প বয়স থেকে যিনি এমন ভাবনায় তাড়িত, তাঁর গজলে এই প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক। সুফি কবি ও সাধক হিসেবে স্বীকৃত হলেও গজলকার হিসেবে যেরকম গণ্য হননি খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি, ঠিক একই কারণেই গজলকার হিসেবে কেউ কেউ তাঁর নাম সমকালের মীর তকী মীর ও মির্জা রফী সওদার কাতারে রাখতে কুণ্ঠিত। অবশ্য এ ক্ষেত্রে খোদ মীর তকী মীরের একটি মন্তব্য আছে, যা অনেকেই উদ্ধৃত করেন, তা হলো: তিনি নাকি আড়াইজন কবিকে সবিশেষ গুরুত্ব দিতেন, যার মধ্যে একজন তিনি নিজে, অন্যজন মির্জা রফী সওদা আর অর্ধজন হলেন খাজা মীর দর্দ।

তাঁর এমন সহজগভীর ভাষার জন্য বোধ হয় বেশ কিছু অনুসারী তৈরি হয়েছিল, যাঁরা নিয়মিত তাঁর মাহফিলে আসতেন। শুধু ভাবশিষ্যরাই নন, সংগীতশাস্ত্রে পারদর্শী খাজা মীর দর্দ মর্যাদার ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন যে তাঁর পাক্ষিক আসরে অনুরাগী হিসেবে কখনো কখনো বাদশাহ শাহ আলমও আসতেন।

শের ও গজলের ক্ষেত্রে মীর তকি মীর শেষমেশ যে উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন সেই জায়গা থেকে বিচার করে তাঁর এই কথাটিকে সদর্থে ধরে নিলে কবিতায় খাজা মীর দর্দের অবদানকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন না করে উপায় নেই। আসলে পারস্য কবিতার ঐতিহ্য ধারণ করে উর্দু গজলে যখন পরবর্তীকালের জনপ্রিয় বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নারীর সঙ্গে আলাপের আবহ তৈরি হচ্ছে, খাজা দর্দ তখন একই উৎস থেকে গ্রহণ করেছিলেন সুফি ঐতিহ্য। সমালোচকদের মতে, তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ ‘দিওয়ান-এ উর্দু’, কিন্তু তাঁর ‘শমা-এ মহফিল’, ‘আহ-এ দর্দ’, ‘দর্দ-এ দিল’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থের প্রাঞ্জল ভাষা ও সুফিহৃদয়ের ভাব সেই সময় ও পরবর্তীকালের কবিদেরকেও প্রভাবিত করেছে। তাঁর একটি অনবদ্য শের হলো: ‘তমান্না তেরি হ্যাঁয় অগর হ্যাঁয় তমান্না/ তেরি আরজু হ্যায় অগর আরজু হ্যায়’ অর্থাৎ, আকাঙ্ক্ষা যদি থাকে, তা তোমারই আকাঙ্ক্ষা/ আশা তোমার জন্য, আদৌ আশা বলে যদি কিছু থাকে’। প্রেমের এমন একনিষ্ঠ নিবেদন খাজা দর্দের শেরেই পাওয়া সম্ভব। নিচে পড়ে নিতে পারি তাঁর আরও একটি জনপ্রিয় শের:

হাজারোঁ খওয়াহিশেঁ অ্যায়সি কে হর খওয়াহিশ পে দম নিকলে
বহুত নিকলে ম্যারে আরমান ল্যাকিন পির ভি কম নিকলে

অর্থাৎ :

এমন হাজার বাসনা আমার, যার প্রতিটি বাসনার জন্য প্রাণ ওষ্ঠাগত
কিছু আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো বটে; কিন্তু তা খুবই সামান্য

তাঁর এমন সহজগভীর ভাষার জন্য বোধ হয় বেশ কিছু অনুসারী তৈরি হয়েছিল, যাঁরা নিয়মিত তাঁর মাহফিলে আসতেন। শুধু ভাবশিষ্যরাই নন, সংগীতশাস্ত্রে পারদর্শী খাজা মীর দর্দ মর্যাদার ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন যে তাঁর পাক্ষিক আসরে অনুরাগী হিসেবে কখনো কখনো বাদশাহ শাহ আলমও আসতেন।

আরও পড়ুনএকাদশ শতকের সুফি কবি হাকিম সানায়ি গজনভি২৮ আগস্ট ২০২৫

মীর দর্দের এমন উচ্চাসনে পৌঁছার অন্য একটি কারণ হলো, তাঁর জন্মের বহু আগে থেকেই গান শোনা ও তার চর্চা বিষয়ে যে তর্ক-বিতর্ক চলে আসছিল, সে বিষয়ে তাঁর সবিস্তার আলোচনা এবং গানবিষয়ক গান লেখার উদাহরণ। আমাদের অজানা নয়, গান বিষয়ে কওয়ালির প্রতিষ্ঠাতা আমির খসরুর একাধিক বাণী আছে, যেমন: ‘গান হলো আত্মার খোরাক’, ‘দরবেশের কাছে গান হলো ঐশ্বরিক জ্যোতির সমতুল’ ইত্যাদি, আর দর্দ লিখেছেন: ‘অগর ঘিনা নফস কো বড়্কায়ে তো হারাম, অগর দিল কো ইলাহ কি তরফ নরম করে তো হালাল’ অর্থাৎ গান যদি মনকে প্রবৃত্তিতাড়িত হতে উসকে দেয় তাহলে হারাম, আর স্রষ্টামুখী করলে হালাল’। এ বিষয়ে দর্দের যে শের রয়েছে, সেটি আরও সুন্দর :

সামা’ আহলে দিল কো হ্যা সোদমন্দ দর্দ
কে ইস সে নরম হোতা হ্যা পাত্থর কা দিল ভি

অর্থাৎ :

হৃদয়বান মানুষের জন্য গান উপকারী, হে দর্দ
কারণ পাথরের মতো হৃদয়ও তাতে গলে যায়।

উল্লেখ্য যে, গান বিষয়ে আলোচনা করবার সময় এ অঞ্চলের গবেষক ও সুফি-বাউল-ফকিরেরা ইমাম গাজ্জালি, মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি ও আমির খসরুর বইয়ের তথ্যের উল্লেখ করেন, কিন্তু প্রকাশ ও প্রচারের অভাবে কোথাও সৈয়দ খাজা মীর দর্দের কথা পাওয়া যায় না। জাভেদ হুসেন দর্দের কয়েকটি গজল অনুবাদ করতে গিয়ে তার ভূমিকায় লিখেছেন: ‘দর্দ ছিলেন একজন বড় সংগীতজ্ঞ। সুফি সাধনায় সংগীতের ভূমিকা নিয়ে হুরমতে ঘিনা নামে পুস্তিকা লিখেছেন। উর্দু গজলের গীতিময়তা আজ দেখা যায় তাতে দর্দের ভূমিকা ব্যাপক ও গভীর।’ এই পুস্তিকাটি দুর্লভ, ভবিষ্যতে এটি অনূদিত হলে শায়ের ও গজলকার মীর দর্দের পাশাপাশি সংগীতচিন্তক হিসেবে তাঁর পরিচয়টাও আমরা জানতে পারব।

অন্য আলো–য় লিখতে পারেন আপনিও। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধসহ আপনার সৃজনশীল, মননশীল যেকোনো ধরনের লেখা পাঠিয়ে দিন। পাঠাতে পারেন প্রকাশিত লেখার ব্যাপারে মন্তব্য ও প্রতিক্রিয়া।
ই–মেইল: [email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ