বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত বৈষম্য নিরসনসহ সব যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ে রবিবার (২৩ ফেব্রয়ারি) এক প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় বিগত পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের দোসর ও মদদপুষ্ট ডিপ্রকৌস কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ব্যর্থতা ও ঠিকমত ফাংশনাল না হয়ে সদস্য প্রকৌশলীদের বোর্ড হতে কাঙ্খিত স্বার্থ ও ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা ডিপ্রকৌস কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ওপর অনাস্থা পোষন করে। একই সঙ্গে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পেশাগত বৈষম্য নিরসনসহ বিদ্যুৎ সেক্টরকে সংস্কার করে ঢেলে সাজাতে অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় ডিপ্রকৌস কমিটি গঠনের প্রস্তাব পেশ করে।

সভায় বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা হয়- 
১.

উপ-সহকারী প্রকৌশলী থেকে সহকারী-প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি ৩৩ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে এ উন্নীতকরণ (বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রায় ৩০ তদূর্ধ্ব প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতির হার ৫০ শতাংশ চালু আছে পাশাপশি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেও অন্যান্য পদের বিপরীতে ৫০ শতাংশ তদূর্ধ্ব পদোন্নতি প্রথা বিদ্যমান শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা এই ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের স্বীকার।

২. অন্যান্য পদের ন্যায় সহকারী-প্রকৌশলী পদে ভারপ্রাপ্ত পদোন্নতি প্রদান। 
৩. উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর পদ বিলুপ্তকরণসহ স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ/পদোন্নতি প্রদান। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর একই জব ডেসক্রিপশন হওয়ার পরও শুধুমাত্র ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতি বঞ্চিত করার লক্ষ্যে উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী পদ সৃষ্টি করা হয় যা ১৯৮২ সার্ভিস রুল বহির্ভূত। 
৪. অন্যান্য ক্যাডার দের ন্যায় উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের উচ্চতর স্কেল/গ্রেড প্রদান করণ।
৫. ডিপিসিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী থেকে প্রতিনিধি রাখা।
৬. আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং টিম কনসেপ্ট অনুযায়ী সেট-আপ ১:৫:২৫ প্রণয়নসহ বিউবোর সব টেকনিক্যাল দপ্তরে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর পদ নিশ্চিত করণ।(বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে সহকারী প্রকৌশলী তদূর্ধ্ব পদে সেট-আপ ঠিক রেখে শুধুমাত্র ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদ বঞ্চিত করে আসছে)।

৭. দেশীয় লিয়েন, ইন্সপেকশনসহ বৈদেশিক প্রশিক্ষণে বৈষম্যহীনদৃষ্টিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী তদূর্ধ্ব পদের কর্মকর্তারা উক্ত সুযোগ সুবিধা প্রতিনিয়ত ভোগ করেন)।

ঢাকা/হাসান/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

সীমিত বাস, ট্রেনে আসন কম দশম দিনেও ছাদে যাত্রী

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বেলতলী বাসস্ট্যান্ড। দুপুরে পাওয়া গেল না কোনো যাত্রী। দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাত্র একটি বাস এখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে। আর রাতে ছাড়ে ১০টি। হাতে গোনা এসব বাসের টিকিট পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে যাত্রীদের। রেলস্টেশনে গিয়ে ঢাকাগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেন পাওয়া যায়। বগির ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেককে ছাদে উঠে বসে থাকতে দেখা যায়। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মও যাত্রীতে ভরা। গত রবি ও সোমবার বাসস্ট্যান্ড এবং রেলস্টেশন ঘুরে পাওয়া গেছে এমন চিত্র।
ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ সড়কে সীমিত বাস সার্ভিস ও ট্রেনে আসন স্বল্পতার কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকার মানুষ। ঈদের ছুটি শেষে দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকা ফিরতে গিয়ে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। তাতেও স্বস্তি নেই তাদের। ঈদের পর দশম দিনেও ভোগান্তি কমেনি তাদের।
বিকল্প পথে দেওয়ানগঞ্জ থেকে ইজিবাইক বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে অনেক যাত্রী জামালপুর গিয়ে সেখান থেকে বাসে করে ঢাকায় ফিরছেন। এতে ঝুঁকির পাশাপাশি ব্যয় করতে হচ্ছে বেশি অর্থ। দেওয়ানগঞ্জ থেকে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়া হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
দিনে বাস না থাকায় ট্রেনের টিকিটের জন্য চেষ্টা করেন বাহাদুরাবাদের যাত্রী নজরুল ইসলাম। কিন্তু পাননি। ট্রেনেও ভিড় থাকায় শেষে বাড়তি খরচ করে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সানন্দবাড়ীর হাফিজুর রহমান বলেন, ট্রেনে টিকিট করেও আসন পাননি। বাধ্য হয়ে ছাদে ওঠেন। তাঁর মতো শত শত যাত্রী কষ্ট মেনে নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন। 
জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ থেকে দিনে চারটি এবং রাতে ১০টি বাস ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে ছেড়ে যায়। যাত্রীসেবাও উন্নত নয়। অধিকাংশ বাস রাতে চলায় ট্রেনে আগ্রহ বেশি যাত্রীর। আর এলাকার শেষ স্টেশন হওয়ায় দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন দিয়ে বকশীগঞ্জ, কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজিবপুর, গাইবান্ধার ফুলছড়ির যাত্রীরা ট্রেনে ঢাকায় যাতায়াত করেন। এ স্টেশন থেকে আন্তঃনগর তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র এবং দেওয়ানগঞ্জ ও জামালপুর কমিউটার নামে দুইটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা ট্রেন যাতায়াত করে। এগুলোয় আসন কম হলেও যাত্রীর চাপ থাকে কয়েক গুণ।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের দশম দিনেও যাত্রীর ভিড় কমেনি। আন্তঃনগর ট্রেনে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার সুযোগ নেই। আর যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতি ঈদে এমন অবস্থা হলেও প্রতিকার মিলছে না। অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।  ফেরদৌস হাসানের ভাষ্য, কমিউটার ট্রেনের টিকিট পেয়ে উঠে দেখেন উপচে পড়া ভিড়। 
সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডেও যাত্রীর উপচে পড়া ভিড়। তারা জানান, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ইজিবাইক ও অটোরিকশায় জামালপুর যাবেন। সেখান থেকে বাসে যাবেন ঢাকায়। এতে বেশি অর্থ খরচ হলেও কর্মস্থলে ঠিক সময়ে পৌঁছানো যাবে। সবুজপুরের যাত্রী আব্দুল ওয়াহাব বলেন, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকার বাসগুলো রাতে চলাচল করায় যাতায়াত সুবিধাজনক নয়। ট্রেনে টিকিট পাওয়া যায় না। অটোরিকশা ও ইজিবাইকে আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন চালক। 
ঈদ উপলক্ষে কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ ট্রেন দিয়েছিল জানিয়ে দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন বলেন, শনিবার থেকে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদের ১০ দিনেও যাত্রীর চাপ কমেনি। ট্রেনের ছাদে উঠতে যাত্রীদের নিষেধ করা হচ্ছে, সচেতন করা হচ্ছে। তবুও ছাদে উঠছে। চাপ কমাতে গেলে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু এবং আসন বৃদ্ধি করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ