ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল প্রথম ইনিংসেই। আরো ভেঙে বললে, পাকিস্তানের শুরুর আদি স্টাইলের ব্যাটিংয়ে। যার ফলাফল এরকম, ৩০০ বলের ইনিংসে ১৪৭টি-ই ডট। পুঁজি নামমাত্র, ২৪১।

আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২২৮ রান করে ব্যাটিং অনুশীলন বেশ ভালোভাবেই করে নিয়েছিল ভারত। তাই পাকিস্তানও পাত্তা পায়নি তাদের কাছে। ভারত জবাবটা কিভাবে দেয়, কার ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি আসে সেটাই ছিল দেখার। নতুন ম্যাচ, নতুন ম্যাচ উইনার। এমন মন্ত্রে মাঠে নামা টিম ইন্ডিয়া পেল পুরোনো এক ম্যাচ উইনারকে, বিরাট কোহলি। যিনি সেঞ্চুরিতে রাঙিয়েছেন নিজের অসাধারণ প্রত্যাবর্তন। তাতে রঙিন হয়েছে ভারতের জয়ের ক্যানভাস।

রান পাচ্ছিলেন না বলে প্রবল সমালোচিত হচ্ছিলেন। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে সব শোধ নিলেন। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়াংখেড়েতে সেঞ্চুরির পর তিন অঙ্ক ছোঁয়া হয়নি তার। সেই সেঞ্চুরি ছিল ইতিহাস গড়া। ভারতের ব্যাটিং ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯তম সেঞ্চুরি ছাপিয়ে সেঞ্চুরির ফিফটি করেছিলেন। লম্বা সময় পর কোহলি তালিকাটা একধাপ এগিয়ে নিলেন।

আরো পড়ুন:

দিল্লিতে মুসলিমশূন্য মন্ত্রিসভা গড়ল বিজেপি

কোহলির সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে ভারত

ভারতের লক্ষ্য খুব একটা বড় ছিল না। বিবর্ণ ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংস থেমে যায় ২৪১ রানে। কোহলির হার না মানা ১০০ রানের ইনিংসে ৪৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।

‘পাকিস্তান-ভারত’ ম্যাচ যতটা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, ২২ গজে তার কোনো রেশই ছিল না। শেষ দিকে কোহলির সেঞ্চুরি পাওয়া নিয়েই যা একটু রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। খুশদীল শাহ যখন ৪৩তম ওভার করতে আসেন তখন ভারত ৪ রান দূর ছিল। কোহলি ব্যাটিংয়ে ছিলেন ৯৫ রানে।

বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম বলে ১ রান নেন কোহলি। স্ট্রাইকে যান অক্ষর প্যাটেল। দ্বিতীয় বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১ রান। তৃতীয় বলে স্ট্রাইকে আবার কোহলি। ওয়ানডেতে তার ৫১তম সেঞ্চুরি পেতে লাগবে ৪ রান। জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন কেবল ২। বাউন্ডারি ছাড়া বিকল্প নেই। ওই বলেই ফুরায় অপেক্ষা। ডাউন দ্য উইকেটে এসে ওয়াইড লং দিয়ে বল সীমানা পাড় করিয়ে হেলমেট খুলে মুখে চওড়া হাসি কোহলির। জয়ের আনন্দের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে তার বার্তা, ‘‘ম্যা হু না।’’

সত্যিই কোহলি আছেন তো! তাকে বলা হয় চেজ মাস্টার। ওয়ানডেতে তার ৫১ সেঞ্চুরির ২৮টি এসেছে দ্বিতীয় ইনিংসে। যার ২৪টিতে আবার জয় ভারতের। অবিস্মরণীয় কিছু ইনিংস তো আছেই। যেমন ঢাকার মাটিতে ২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে করা ১৮৩ রানের ইনিংস এখনও তার ক্যারিয়ার সেরা।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক হল র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ