বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকা ছিল: আদালত
Published: 24th, February 2025 GMT
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক এডিসি শাহেন শাহের রিমান্ড শুনানিতে এ মন্তব্য করেন।
মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ শাহেন শাহের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
শাহের শাহ আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘‘তখন তিনি অ্যাডমিন হিসেবে কাজ করেন। আর একজন অ্যাডমিনের কাজ কে কোথায় ডিউটি করবে, এটা তদারকি করা। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সঠিক না। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি।’’
রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘‘২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ডিবির হারুন ও শাহেন শাহ রমনার দায়িত্বে ছিলেন। বিএনপির এই আন্দোলন বানচালের জন্য পরিকল্পনা করেন তারা। পরবর্তীতে তাদের সহায়তায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি যেদিন সমাবেশ ডাকতো সেদিন আওয়ামী লীগও সব সময় একটা সমাবেশ ডাকতো। আর তার নাম দিত শান্তি সমাবেশ। কিন্তু তাদের হাতে থাকতো অস্ত্র, লাঠি, সোটা। আর এতে হারুন, শাহেন শাহের নির্দেশে সহায়তা করতো পুলিশ বাহিনী। সেদিনের সমাবেশে আমিও উপস্থিত ছিলাম। জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানো হয়। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করে। গাজায় আজ যেমন পরিস্থিতি, সেখানেও ওই রকম পরিস্থিতি হয়েছিল। ভীতিকর অবস্থা। কী অবস্থা বর্ণনা করা যায় না। আমরা মামলা করতে যাই। হাসিনার নির্দেশে মামলা নেওয়া হয়নি। সেখানে জাহাঙ্গীর গুলি করছে আর পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা সাহায্য করেছে।’’
শাহেন শাহের আইনজীবী বলেন, ‘‘এজাহারে তার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। তিনি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না।’’
এ সময় আদালত বলেন, ‘‘আপনাদের পিটিশনে আছে উনি তখন ডিবি পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, আমরা সেটা টিভিতে দেখেছি।’’ পরে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডে আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়। শাহেন শাহ এ মামলার ৪৯ নম্বর আসামি।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।