দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিমানের বিজি ৩৪৭ নম্বর ফ্লাইট ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করায় চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা বলে অভিযোগ উঠেছে। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে। এ ফ্লাইটের এক নারীসহ চিৎকার করে ২ যাত্রীকে বলতে শোনা যায় বিমানের স্টাফরা কোন প্রকার খোজ খবর বা সহযোগিতা করেননি যাত্রীদের। এসময় ওই নারী যাত্রী চিৎকার করে বলেন, নাগপুর বিমানবন্দরে বিমানের ফ্লাইট থেকে নামতে না দেওয়ায় দীর্ঘ সময় আটকা থাকেন যাত্রীরা। এতে করে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেক যাত্রী।

শুধু তাই নয় যাত্রীদের উদ্দেশে ওই নারী বলতে থাকেন আপনারা বিমানকে বয়কট করেন। এসময় ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে অপর এক পুরুষ যাত্রী নানা মন্তব্য করেন।

রোববার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাঠানো এক তথ্যে বলা হয়েছে, গত বুধবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ৩৯৬ জন যাত্রী নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে বিমানের একটি ফ্লাইট। যাত্রী ছাড়া বিমানের এ ফ্লাইটে ২২ টন কার্গো মালামাল ছিল। এ ছাড়া ২ জন বৈমানিকসহ ১২ জন বিমান স্টাফ ছিলেন বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটিতে।

এ বিষয়ে বিমানের মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগ কর্মকর্তা বোসরা ইসলাম সমকালকে জানান, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশে ছাড়া বিমানের এ ফ্লাইটিট ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের নাগপুর শহর অতিক্রম করার সময় ক্যাপ্টেন পিছনের কার্গো কম্পার্টমেন্ট থেকে ককপিটে ফায়ার সতর্কীকরণ সংকেত পান। এসময় যাত্রীদের নৈশভোজ পরিবেশন করা হচ্ছিল। উক্ত ফ্লাইটের পাইলট-ইন-কমান্ড নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং উড়োজাহাজ পরিচালনার দিক নির্দেশনা অনুযায়ী নিকটবর্তী ভারতের নাগপুরের ড.

বাবা সাহেব আমবেদকা বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২৭ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করেন।

তিনি বলেন, বৈমানিক নাগপুরে বিমান অবতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরই সকল যাত্রীকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাগপুরে অবতরনের সিদ্ধান্তটি ইন-ফ্লাইট এনাউন্সের মাধ্যমে অবহিত করেন। ফ্লাইটটি নাগপুরে অবতরণের পর সকল যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ১২ ক্রুসহ সর্বমোট ৪০৮ জনকে বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি বাসে করে উড়োজাহাজটি থেকে আনুমানিক অর্ধ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বেশি সময় ওই ৪০৮ জনকে বিমানবন্দর টার্মিনালে নিয়ে যাবার অনুমতি দেয়। এসময় পানি এবং টয়লেট সুবিধার জন্য যাত্রীরা বার বার অনুরোধ করা সত্যেও ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা অনুমতির আনুষ্ঠানিকতার প্রসঙ্গ তুলে তা প্রদান করা থেকে বিরত থাকেন। এতে করে বিশেষভাবে বৃদ্ধ এবং নারী যাত্রীগণ সবচাইতে বেশি দুর্ভোগে পড়েন। পরবর্তীতে রাত ১টায় টার্মিনালে যাত্রীদের লাউঞ্জে নেওয়ার অনুমতি দেন।

ইতোমধ্যে ভারতের নাগপুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল এর মাধ্যমে যাত্রীদের সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং সেইসাথে আশ্বস্ত করা হয় যে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যাত্রীদের সুবিধার্থে সব বিষয়ের যাবতীয় খরচ বহন করবে। নাগপুর কর্তৃপক্ষ অবহিত করেন, এই বিপুল সংখ্যক খাবার প্রস্তুতের জন্য তাঁদের ৩-৪ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৭৭ এর মত এত বৃহদাকার যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ওই বিমানবন্দরে নিয়মিত চলাচল করে না। বিমানের যাত্রীদের হোটেলে পাঠানের জন্য অনুরোধ করা হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অস্থায়ী ল্যান্ডিং পারমিট প্রদানে অপরাগতা প্রকাশ করে। একারণে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের টার্মিনালেই থাকতে হয়।

যাত্রীদের দেখাশোনা করার জন্য বিমানের দিল্লিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজারকে বলা হলে তিনি সেখানে ইনডিগো এয়ার-এ করে ৯টা ১৫ মিনিটে নাগপুরে পৌঁছান। আনুমানিক ভোর ৩টায় যাত্রীদেরকে পানি সরবরাহ করা হয়। সকাল ৭টায় পানি ও চা দেওয়া হয় এবং সকাল সাড়ে ১০টায় নাস্তা পরিবেশন করা হয়। নাগপুর ক্যাটারিং-এর সীমিত সক্ষমতা থাকার কারণে নাস্তা দিতে সময় বেশি লেগেছে।

বিমানের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিমানের এ ফ্লাইটের এক নারী যাত্রীর চিৎকার করে বলা ভোগান্তির বিষয়টি আদৌ সত্য নয়। এ বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া ব্যবস্থা চলছে। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ফ ল ইট ব যবস থ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমিক দিবসে রিকশাচালকদের পাশে নারায়ণগঞ্জ ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ’
  • ফ্যাসিস্টদের দোসররা বিভিন্ন ইস্যূতে পানি ঘোলা করতে চায়: মাও. জব্বার
  • ফ্যাসিস্টদের দোসররা বিভিন্ন ইসূতে পানি ঘোলা করতে চায়: মাও. জব্বার
  • চকলেটের লোভ দেখিয়ে শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • মাও. রইস এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শহরে বিক্ষোভ
  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 
  • আড়াইহাজারে পাওয়ারলুম শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
  • চট্টগ্রামে ব্যাটরিচালিত রিকশা শ্রমিকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • ৭ দফা দাবিতে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ফটক সভা