আমরা কি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি স্থানীয় নির্বাচনের জন্য, প্রশ্ন গয়েশ্বর রায়ের
Published: 25th, February 2025 GMT
বিএনপি ১৭ বছর ধরে একটি নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছে উল্লেখ করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এ (নির্বাচনের) দাবি নতুন কিছু না। ইতিবাচক কথা ডিসেম্বরের মধ্যে নাকি নির্বাচন। এটা সত্য মিথ্যা জানি না। তবে এই নির্বাচন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নাকি জাতীয় সরকার নির্বাচন হবে—এটা একটা বিরাট প্রশ্ন। আমরা কি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি স্থানীয় নির্বাচনের জন্য? না, আমরা আন্দোলন করছি জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটা পার্লামেন্ট সরকারের জন্য।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো, দ্রুত নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করে গাজীপুর জেলা বিএনপি।
নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করতে হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন আমাদের আদায় করতে হবে, নাকি যাঁরা আছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় সুন্দরমতো একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন—এই বিষয়টি জনগণ এখনো অনুমান করতে পারছে না। আমরাও অনুমান করতে পারছি না।’
সংস্কারের জন্য কত সময় লাগবে—অন্তর্বর্তী সরকারকে তা জানানোর আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের কথা শুনি না। আমরা সকাল-বিকেল সংস্কারের কথা শুনি। সারা দিন সংস্কারের জারি গান কেন, এই জারি গান শোনার দরকার নেই। আপনারা একটা ভোট দেবেন, ভোট হওয়ার জন্য কতটুকু সময় দরকার আমরা জানি। সুতরাং সংস্কার করতে কত সময় লাগবে, ওই সময়টা বলে দেন। আমার মনে হয় আপনাদের অনন্তকাল লাগবে। তার মানে সারা জীবন দরকার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, কিন্তু জনগণ বলে এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার। সরকারের কাছে অনুরোধ করে বলব, আপনারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাইরে পথ চললে হোঁচট খেতে পারেন। ধাক্কা দিলেও খেতে পারেন, না দিলেও খেতে পারেন।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট ছাত্রদের আন্দোলনে প্রথম থেকেই আমরা তাদের নৈতিক সাপোর্ট দিয়েছি। তারপর দিয়েছি সর্বোত্তম সমর্থন। এরপর ছদ্মবেশে ঢুকে গেছি সেই আন্দোলনে। আমরা খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, বিএনপির নাম নিয়ে আন্দোলন করিনি, আমরা ছদ্মবেশে ছাত্রদের হয়ে কাজ করেছি।’
নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণের কাছে কেউ দায়বদ্ধ থাকে না উল্লেখ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধতায় না। ড.
শুক্রবার নতুন দলের ঘোষণার কথা শুনেছেন উল্লেখ করে গয়েশ্বর রায় আরও বলেন, ‘আপনার সরকারে মন্ত্রিসভায় যাঁরা আছে, তাঁদের নামিয়ে দেন। গাছের আগারটাও খাবেন, তলেরটাও খাবেন, তা হবে না। একটা খাইতে হবে। হয় রাজনৈতিক দল করে মাঠে নামেন, না হলে সরকারে বসে খাচ্ছেন খান চুপ করে।’
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব চৌধুরী ইশরাক আহাম্মেদ সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র য় বল ন দ য়বদ ধ ব এনপ র জনগণ র সরক র দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে অবিশ্বাস দূর, সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের পথ সুগম হবে: সাইফুল হক
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক দেশে আগামী সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক অচলাবস্থা, সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করবে বলে আশা করছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি।
লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকের বিস্তারিত সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করারও আহ্বান জানিয়েছেন সাইফুল হক।
সরকারের এই উদ্যোগ বিলম্বিত বোধদয়ের ফল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সাইফুল হক বলেন, আরও আগে সরকারের এই বোধদয় হলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ও রাজনৈতিক বিরোধ এড়িয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ মৌলিক কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া যেত।
সব অংশীজনকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে কাজ করার আহ্বান জানান সাইফুল হক। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্মানজনক প্রস্থানের রাস্তা সুগম হলো।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাইফুল হক বলেন, দেশের মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে তাঁর দল জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আগামীতে আপসহীন ধারায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল ও মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক। সমাবেশে সংহতি জানান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহবায়ক শেখ আবদুর নূর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম মীর, রেজাউল আলম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক আইয়ুব আলী, বাবর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির নেতা মো. সালাউদ্দীন, মিজারুল রহমান ডালিম, আরিফুল ইসলামসহ পার্টির ঢাকা মহানগরের নেতারা।