বরগুনার বেতাগীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যানারে নাম না দেওয়ার জেরে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ূন কবির ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

হুমায়ুন কবির ও তাঁর সমর্থকদের অভিযোগ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহজাহান কবির ও তাঁর ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শোয়েব কবিরের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন হুমায়ুন কবির, শোয়েব কবির ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল খান। জামাল খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির। পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলার সময় শাহজাহান কবিরের ছেলে শোয়েব কবির অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। ব্যানারে তাঁর বাবা শাহজাহান কবিরের নাম দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে শোয়েব অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকেন। খবর পেয়ে শাহজাহান কবির লোকজন নিয়ে কলেজের বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে হুমায়ুন কবিরের অনুসারীরাও ঘটনাস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহিন জানান, শাহজাহান কবিরকে দাওয়াত কার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে বর্তমানে তাঁর কোনো দলীয় পদ না থাকায় ব্যানারে নাম রাখা হয়নি। এ কারণে তিনি ও তাঁর ছেলে (শোয়েব কবির) লোকজন নিয়ে কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালান।

একই অভিযোগ করেন হুমায়ুন কবির ও জামাল খান। হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অনুষ্ঠানের ব্যানারে নাম না থাকায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজাহান কবির ও তাঁর ছেলে শোয়েব সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করেন। আমিসহ আমার দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলার বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান কবির বলেন, ‘আমার বড় ছেলে শোয়েব অধ্যক্ষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল। এ সময় হুমায়ূন কবির লোকজন নিয়ে সেখানে যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এতে আমার ছেলের মাথায় আঘাত পায়। এরপর পোলাপানে আবার পাল্টা পিটাপিটি করছে। এখন মিটমাট হয়ে গেছে।’

অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মনিরুজ্জামান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ব এনপ র কজন ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

‎পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।

রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। ‎‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত

‎নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।

‎পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

‎নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।” 

‎তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”

‎পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।” 
 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ