কুবিতে আইন অমান্য করে তারুণ্যের উৎসবের প্রচারণা
Published: 26th, February 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫। উৎসবকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব প্রচারণায় গাছে পেরেক মেরে বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গাছে পেরেক মারা পোস্টার দেখা যায়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , বিশ্ববদ্যালয়ের গোল চত্ত্বর থেকে মুক্তমঞ্চে যাওয়ার রাস্তায় দুইপাশে থাকা গাছে পেরেক দিয়ে ব্যানার লাগানো হয়েছে। মুক্তমঞ্চ পার হয়ে শিক্ষকদের ডরমিটরি ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে উঠার রাস্তার আগ পর্যন্ত একই অবস্থা দেখা গেছে। এছাড়া, কৃষ্ণচূড়া রোডের গাছগুলোতেও পেরেক মেরে পোস্টার টানানো হয়েছে।
এদিকে, গাছে পেরেক মেরে সাইনবোর্ড না লাগাতে ২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়। কিন্ত বাস্তবে সে আইন কার্যকর হয়নি। সিটি কর্পোরেশন আইন ১৯৯০ এর ৯২ ধারার ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যত্রতত্র পোস্টার-ব্যানারসহ প্রচারপত্র সেঁটে দেওয়া এবং গাছে সাইনবোর্ড লাগানো দণ্ডনীয় অপরাধ। এ আইনের আওতায় ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও আছে।
দুঃখ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পর্কিত সংগঠন অভয়ারণ্য কুবির সভাপতি তামিম মিয়া বলেন, “পেরেক লাগানো গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পেরেক লাগানোর ফলে গাছের যে ছিদ্র হয়, ছিদ্র দিয়ে পানি এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব প্রবেশ করার ফলে গাছগুলোর দ্রুত পচন ধরে।”
তিনি বলেন, “এতে খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে গাছগুলো মারা যেতে পারে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা প্রয়োজন, সেখানে উল্টো গাছের ক্ষতি করে চলেছে। পরিবেশকে রক্ষার জন্য সকলের সচেতন হওয়া উচিত।”
এ বিষয়ে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ এর আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড.
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু