দীর্ঘ সময়ের জন্য যেকোনো কিছু করার আগে আমরা সুচিন্তিতভাবে পরিকল্পনা নিয়ে থাকি। রমজানের আগেই সেভাবে রোজার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার আছে। সাহাবিদের জীবনী পড়লে দেখা যায় রমজান উপলক্ষে তাঁরা ইবাদতের পরিকল্পনা করতেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে তিন ধরনের লোকের ভাগ্যকে দুর্ভাগ্য বলেছেন। তাদের মধ্যে আছে তারা, যারা রমজান মাস পেয়েও নিজেদের গুনাহ্ মাফ করাতে পারল না।
আল কোরআনে আছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের পথপ্রদর্শক ও সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন। এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মীমাংসারূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। অতএব তোমাদের মধ্যে যে-কেউ এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে অবশ্যই রোজা রাখে। আর যে রোগী বা মুসাফির তাকে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না, যাতে তোমরা নির্ধারিত দিন পূর্ণ করতে পার ও তোমাদেরকে সৎ পথ পরিচালিত করার জন্য আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করতে পার, আর তোমরা কৃতজ্ঞ হলেও হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
রোজা রাখার নিয়ত
রোজা রাখার জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। রোজার আগে থেকেই দোয়া করা যায় যেন সুস্থ থেকে রোজা রাখা যায় ।
রাসুলুল্লাহ (সা.
রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে তিন ধরনের লোকের ভাগ্যকে দুর্ভাগ্য বলেছেন। তাদের মধ্যে আছে তারা, যারা রমজান মাস পেয়েও নিজেদের গুনাহ্ মাফ করাতে পারল না।
আরও পড়ুনরোজার নিয়ত২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪কোরআন–চর্চা
রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। এই মাসে কোরআন তিলাওয়াত করা, অর্থ বুঝে কোরআন পড়া, কোরআনের তফসির পড়া এবং সেই অনুযায়ী জীবনে তা প্রয়োগ করার গুরুত্ব রয়েছে। সাহাবিরা অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে দ্বিগুণ কোরআন খতম দিতেন।
কোরআন তিলাওয়াত করা সুন্নত, এমনকি তিলাওয়াত শোনাও। ইফতারের আগে বা পরে যখনই সময় পাওয়া যায় নিজে কোরআন তিলাওয়াত করা, অন্যের তিলাওয়াত শোনা, বাংলা বা ইংরেজিতে তফসির পড়া উত্তম চর্চার অংশ।
এ ছাড়া সুরা ইয়াসিন, আর রহমান, মূলক, হাশর বা কাহাফ মুখস্থ করা যায়। সুরা ইয়াসিনে ৮৩ আয়াত আছে। কিন্তু প্রতিদিন ৩ আয়াত করে মুখস্থ করলেই রোজার এক মাসে সুরা ইয়াসিন মুখস্থ হয়ে যাবে। প্রতিদিন যে কয় আয়াত মুখস্থ করবেন, সেই আয়াত দিয়ে আগের দিনের শেখা অংশগুলোসহ নামাজ পড়বেন। ধরুন তিন দিনে নয় আয়াত মুখস্থ হলো। নামাজে সুরা ফাতিহার সঙ্গে ওই ৯ আয়াত পড়া যায়।
নিজে পড়া ছাড়াও বাসার অন্য সদস্যরাও যাতে কোরআন পড়তে পারে সে ব্যাপারে সহায়তা করা দরকার।
তারাবির নামাজ বাসায় বা মসজিদে যেকোনো জায়গায় পড়া যায়। তবে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়লে আলস্য অতিক্রম করা সহজ।
আরও পড়ুনরোজার কাজা, কাফফারা ও ফিদিয়া কী০২ মার্চ ২০২৪অন্যান্য কার্যক্রম
রমজান মাসে নিজের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছাড়াও দিনমজুর ও গরিবরা যাতে রোজা রাখতে পারে, সে জন্য ইফতার ও সাহরির ব্যবস্থা করা ভালো।
দ্বিতীয় হিজরিতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বদরের যুদ্ধ এই মাসে সংঘটিত হয়। মুসলমানেরা সে যুদ্ধে জয়ী হয়। অষ্টম হিজরিতে তাঁরা মক্কা বিজয় করে। এসব ব্যাপারে জানতে হলে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে বইপুস্তক পড়া যায়।
রমজানের শেষ দশদিন পুরুষেরা মসজিদে গিয়ে ইতিকাফ করতে পারেন। কারণ রমজান গুনাহ্ মাফের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।
রমজানের বিশেষ তিনটি আমল হলো: ১. কম খাওয়া, ২. কম ঘুমানো, ৩. কম কথা বলা। এ ছাড়া হারাম থেকে দূরে থাকা; চোখের হেফাজত করা, কানের হেফাজত করা, জবানের হেফাজত করা।
আরও পড়ুনইফতারের দোয়া২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স য় রমজ ন র জন য ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।
ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।
অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।
ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়