Prothomalo:
2025-11-03@05:34:23 GMT

রোজার প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

Published: 28th, February 2025 GMT

দীর্ঘ সময়ের জন্য যেকোনো কিছু করার আগে আমরা সুচিন্তিতভাবে পরিকল্পনা নিয়ে থাকি। রমজানের আগেই সেভাবে রোজার প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার আছে। সাহাবিদের জীবনী পড়লে দেখা যায় রমজান উপলক্ষে তাঁরা ইবাদতের পরিকল্পনা করতেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে তিন ধরনের লোকের ভাগ্যকে দুর্ভাগ্য বলেছেন। তাদের মধ্যে আছে তারা, যারা রমজান মাস পেয়েও নিজেদের গুনাহ্ মাফ করাতে পারল না।

আল কোরআনে আছে, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের পথপ্রদর্শক ও সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন। এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মীমাংসারূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। অতএব তোমাদের মধ্যে যে-কেউ এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে অবশ্যই রোজা রাখে। আর যে রোগী বা মুসাফির তাকে অন্য দিনে এ সংখ্যা পূরণ করতে হবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না, যাতে তোমরা নির্ধারিত দিন পূর্ণ করতে পার ও তোমাদেরকে সৎ পথ পরিচালিত করার জন্য আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করতে পার, আর তোমরা কৃতজ্ঞ হলেও হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

রোজা রাখার নিয়ত

রোজা রাখার জন্য আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। রোজার আগে থেকেই দোয়া করা যায় যেন সুস্থ থেকে রোজা রাখা যায় ।

রাসুলুল্লাহ (সা.

) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজাগুলো রাখে, তার আগের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’

রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে তিন ধরনের লোকের ভাগ্যকে দুর্ভাগ্য বলেছেন। তাদের মধ্যে আছে তারা, যারা রমজান মাস পেয়েও নিজেদের গুনাহ্ মাফ করাতে পারল না।

আরও পড়ুনরোজার নিয়ত২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কোরআন–চর্চা

রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। এই মাসে কোরআন তিলাওয়াত করা, অর্থ বুঝে কোরআন পড়া, কোরআনের তফসির পড়া এবং সেই অনুযায়ী জীবনে তা প্রয়োগ করার গুরুত্ব রয়েছে। সাহাবিরা অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে দ্বিগুণ কোরআন খতম দিতেন।

কোরআন তিলাওয়াত করা সুন্নত, এমনকি তিলাওয়াত শোনাও। ইফতারের আগে বা পরে যখনই সময় পাওয়া যায় নিজে কোরআন তিলাওয়াত করা, অন্যের তিলাওয়াত শোনা, বাংলা বা ইংরেজিতে তফসির পড়া উত্তম চর্চার অংশ।

এ ছাড়া সুরা ইয়াসিন, আর রহমান, মূলক, হাশর বা কাহাফ মুখস্থ করা যায়। সুরা ইয়াসিনে ৮৩ আয়াত আছে। কিন্তু প্রতিদিন ৩ আয়াত করে মুখস্থ করলেই রোজার এক মাসে সুরা ইয়াসিন মুখস্থ হয়ে যাবে। প্রতিদিন যে কয় আয়াত মুখস্থ করবেন, সেই আয়াত দিয়ে আগের দিনের শেখা অংশগুলোসহ নামাজ পড়বেন। ধরুন তিন দিনে নয় আয়াত মুখস্থ হলো। নামাজে সুরা ফাতিহার সঙ্গে ওই ৯ আয়াত পড়া যায়।

নিজে পড়া ছাড়াও বাসার অন্য সদস্যরাও যাতে কোরআন পড়তে পারে সে ব্যাপারে সহায়তা করা দরকার।

তারাবির নামাজ বাসায় বা মসজিদে যেকোনো জায়গায় পড়া যায়। তবে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়লে আলস্য অতিক্রম করা সহজ।

আরও পড়ুনরোজার কাজা, কাফফারা ও ফিদিয়া কী০২ মার্চ ২০২৪

অন্যান্য কার্যক্রম

রমজান মাসে নিজের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছাড়াও দিনমজুর ও গরিবরা যাতে রোজা রাখতে পারে, সে জন্য ইফতার ও সাহরির ব্যবস্থা করা ভালো।

দ্বিতীয় হিজরিতে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বদরের যুদ্ধ এই মাসে সংঘটিত হয়। মুসলমানেরা সে যুদ্ধে জয়ী হয়। অষ্টম হিজরিতে তাঁরা মক্কা বিজয় করে। এসব ব্যাপারে জানতে হলে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে বইপুস্তক পড়া যায়।

রমজানের শেষ দশদিন পুরুষেরা মসজিদে গিয়ে ইতিকাফ করতে পারেন। কারণ রমজান গুনাহ্‌ মাফের জন্য সুবর্ণ সুযোগ।

রমজানের বিশেষ তিনটি আমল হলো: ১. কম খাওয়া, ২. কম ঘুমানো, ৩. কম কথা বলা। এ ছাড়া হারাম থেকে দূরে থাকা; চোখের হেফাজত করা, কানের হেফাজত করা, জবানের হেফাজত করা।

আরও পড়ুনইফতারের দোয়া২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স য় রমজ ন র জন য ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ