Samakal:
2025-06-16@06:02:18 GMT

ক্রিকেটের সংগ্রহ

Published: 28th, February 2025 GMT

ক্রিকেটের সংগ্রহ

ক্রিকেট শুধু একটি খেলা নয়– এটি আবেগ, ভালোবাসা আর স্মৃতির এক অমূল্য সংকলন। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা মেয়েদের বিশ্বকাপ– প্রতিটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) টুর্নামেন্ট বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ভক্তকে একত্র করে, পরিণত হয় এক মহোৎসবে। স্মরণীয় মুহূর্তগুলো ধরে রাখার এক বিশেষ মাধ্যম হলো ক্রিকেট স্মারক সংগ্রহ। এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ আইসিসি ইভেন্টের অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ।
বাংলাদেশে আইসিসির প্রথম বৈশ্বিক ইভেন্ট হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম আসর ‘উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ ১৯৯৮’ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকায়, যেখানে অংশ নিয়েছিল ৯টি দেশ। আমার জন্য এটি এক অনন্য স্মৃতি হয়ে রয়েছে, কারণ আমার বাবা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জি এম পাইকার আমাকে সেই ইভেন্টে ‘বলবয়’ হিসেবে থাকার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এর ফলে আমি কাছ থেকে দেখতে পেয়েছিলাম বিশ্ব ক্রিকেটের তৎকালীন সেরা তারকাদের। সে সময় থেকেই শুরু হয় আমার অটোগ্রাফ সংগ্রহ ও ক্রিকেট স্মারক সংগ্রহের নেশা। যদিও তখন শুধু কিছু ফটো আর অটোগ্রাফই সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম।  প্রায় ১৯ বছর পর, ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যের এক ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহকের কাছ থেকে সেই ইভেন্টের একটি ‘অফিসিয়াল টাই’ সংগ্রহের সুযোগ হয়।
ক্রিকেট স্মারক সংগ্রহ করা শুধু ভালোবাসা বা শখের বিষয় নয়, এটি এক ধরনের ঐতিহাসিক সংরক্ষণও বটে। বিশেষ করে আইসিসির অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহ করা অনেক ভক্তের কাছে টুর্নামেন্টের রোমাঞ্চকর স্মৃতি ধরে রাখার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
মার্চেন্ডাইজ বলতে বোঝায় বিশেষ কোনো ক্রীড়া ইভেন্ট, দল বা খেলোয়াড়কে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ও বিক্রীত পণ্য, যা সাধারণত অফিসিয়ালভাবে প্রস্তুত ও বাজারজাত করা হয়। এটি আয়োজকদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্থান। অফিসিয়াল জার্সি, চাবির রিং, ক্যাপ, ব্যাজ, মাসকট, ব্যাগ, ট্রফির রেপ্লিকা এসব পণ্য ভক্তদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
আমার প্রথম অফিসিয়াল আইসিসি মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহের যাত্রা শুরু হয় ২০১১ বিশ্বকাপ থেকে; যখন ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেই বিশ্বকাপে সংগ্রহ করা টি-শার্ট, কোট পিন, চাবির রিং, ক্যাপগুলো আজও আমার সংগ্রহে এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে।
স্মারক সংগ্রহের অন্যতম সৌন্দর্য হলো এগুলোর পেছনের গল্প। অনেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে এগুলো সংগ্রহ করেন, আবার কেউ অনলাইনের মাধ্যমে দূর থেকেও সংগ্রহ করেন। বিশ্বকাপ ট্রফির আইকনিক ডিজাইন ও লোগোযুক্ত জিনিসপত্র বিশেষভাবে সংগ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয়। ম্যাচের টিকিট, যা প্রায়ই দলের লোগো ও সুন্দর গ্রাফিকসের মাধ্যমে মুদ্রিত হয়, সংগ্রহকারীদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান হয়ে ওঠে। কোটপিন ও চাবির রিংও সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়, কারণ এগুলো সূক্ষ্ম নকশায় টুর্নামেন্টের চিহ্ন বহন করে। এমনকি সাধারণ মগ কিংবা চাবির রিংও বিশ্বকাপের অনন্য মোটিফ দিয়ে সজ্জিত থাকে।
বিশ্বজুড়ে অনেক ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক রয়েছেন, যারা আইসিসি ইভেন্টের অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাদেরই একজন যুক্তরাজ্যের সংগ্রাহক অ্যান্ড্রু কোলিয়ার বলেন, ‘আইসিসি ইভেন্টের অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ শুধু একটি স্মারক নয়, এটি ইতিহাসের একটি অংশ। প্রতিটি সংগ্রহের পেছনে থাকে অবিস্মরণীয় স্মৃতি, যা আমাদের সেই বিশেষ মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’ অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রাহক পিটার স্কোফিল্ড বলেন, ‘বিশ্বকাপ বা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্মারক সংগ্রহ করা আমার কাছে অন্যরকম এক আবেগ। বিশেষ করে ম্যাচে ব্যবহৃত বল, টস কয়েন ও অফিসিয়াল জার্সি এগুলোর বিশেষ জায়গা রয়েছে আমার সংগ্রহে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেট সংগ্রাহক মেজর (অব.

) এম তানিম হাসান বলেন, ‘আমি যখনই কোনো আইসিসি ইভেন্টের অফিসিয়াল স্টোরে যাই, তখন কিছু না কিছু কিনে আনি। এসব সামগ্রী শুধু ক্রিকেটপ্রেম নয়; বরং ক্রিকেটের প্রতি আমার আবেগের বহিঃপ্রকাশ। আমার অংশগ্রহণ করা সব আইসিসি ইভেন্টের ফাইনাল খেলার টিকিট সংগ্রহে রেখেছি।’
অনেক ক্রিকেটপ্রেমী তাদের প্রিয় দলকে সমর্থন করতে মহাদেশ পেরিয়ে বিদেশেও যান। মাঠে সরাসরি ম্যাচ উপভোগের পাশাপাশি তারা অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহ করেন, যা শুধু একটি স্মারক নয়; বরং তাদের ভ্রমণ ও অংশগ্রহণের এক চিরস্মরণীয় নিদর্শন হয়ে থাকে। আমার সংগ্রহ সমৃদ্ধ করতে অনেক প্রিয়জনই আমাকে অফিসিয়াল স্মারক উপহার দিয়েছেন, যা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করেছি।
আমার প্রথম দেশের বাইরে অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহের অভিজ্ঞতা হয় ২০১৬ আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যেখানে ভারতের বিভিন্ন স্টেডিয়াম থেকে আইসিসির অফিসিয়াল পণ্য সংগ্রহ করার সুযোগ পাই। এ ছাড়াও অনলাইনে বেশ কয়েকবার আইসিসি স্মারক কিনেছি। আইসিসির অফিসিয়াল চাবির রিং ও কোট পিন বিশেষভাবে আমার প্রিয়, কারণ এগুলোর দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন ও চমৎকার মান সত্যিই অনন্য। যদিও তুলনামূলকভাবে অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজগুলোর দাম একটু বেশিই থাকে। চাইলে আপনারাও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহ করতে পারেন এই ওয়েবসাইট থেকে: global-shop.icc-cricket.com। 
বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমীরা আইসিসি ইভেন্টের ব্যবহৃত টসের কয়েন, বল এবং স্কোরকার্ড সংগ্রহ করতে পারেন নিলামের মাধ্যমে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর অকশন ওয়েবসাইট auctions.officialmemorabilia.com.au ভিজিট করে যে কেউ অংশ নিতে পারেন এবং জিতে নিতে পারেন ম্যাচে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক স্মারকগুলো। আমি সৌভাগ্যবান যে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জয় দিয়ে শুরু হওয়া প্রথম ম্যাচে ব্যবহৃত টসের কয়েন সংগ্রহ করতে পেরেছি। এ ছাড়াও ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাউদাম্পটনে সাকিব আল হাসানের ৫ উইকেট নেওয়া ম্যাচের বল এবং লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মোস্তাফিজুর রহমানের ৫ উইকেট পাওয়া ম্যাচে ব্যবহৃত বলও আমার সংগ্রহে গর্বের অংশ।
স্টেডিয়ামগুলোতে আইসিসি ইভেন্ট চলাকালীন লোগো-সংবলিত বিশেষ ড্রিংসের কাপ, চার-ছয়ের বোর্ড, ফিতাসহ টিকিট হোল্ডার ছাড়াও ছোটখাটো স্মারক বানানোর মতো আইটেম পাওয়া যায়। যেগুলো সবই সেই ইভেন্টের স্মৃতি বহন করে। আইসিসি তাদের অতিথিদের জন্য উপহারস্বরূপ ইভেন্টের টাই, স্যুভেনির কয়েন, মোমেন্টো, ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে থাকে, যা সংগ্রহ করা দুরূহ।
আমার সংগ্রহে রয়েছে এমন অনেক ম্যাচ টিকিট, যা একেকটি অনন্য ইতিহাসের অংশ। যেমন– ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচ জয় কিংবা ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালের টিকিট। বিশেষ পারফরম্যান্সের স্মৃতিবিজড়িত টিকিট সংগ্রহের পাশাপাশি সেই ম্যাচগুলোর সেরা খেলোয়াড়দের অটোগ্রাফ নেওয়াও এক অসাধারণ অনুভূতি। তামিম ইকবালের প্রথম টি২০ শতকের ম্যাচের টিকিট, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২০১৫ বিশ্বকাপ ও ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরি করা ম্যাচের টিকিট, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ২০১৯ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করা ম্যাচের টিকিটগুলোতে তাদের অটোগ্রাফ নেওয়া সত্যিই দারুণ এক অভিজ্ঞতা।
এ ছাড়া ১৯৯৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইডেন গার্ডেনসে শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক জয়ের টিকিটও আমার সংগ্রহে রয়েছে, যেখানে ম্যান অব দ্য ম্যাচ অরবিন্দ ডি সিলভার অটোগ্রাফ সেই ম্যাচের মহাকাব্যিক জয়কে স্মরণীয় করে তুলেছে। ক্রিকেট ইতিহাসের এমন দুর্লভ স্মারক সংরক্ষণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্য ও আবেগের অংশ হয়ে ওঠে। টিকিটগুলো কেবল টুকরো কাগজ নয়; বরং একেকটি মুহূর্তের ঐতিহাসিক স্মারক।
ক্রিকেট শুধু একটি খেলা নয়, এটি স্মৃতির এক অনন্য ভান্ডার, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে। ক্রিকেটের জগতে আবেগের কোনো সীমা নেই। প্রত্যেক ক্রিকেট ভক্ত ইতিহাসের একটি অংশ নিজের করে রাখতে চায়, অফিসিয়াল মার্চেন্ডাইজ সংগ্রহ সেই স্বপ্নপূরণে অনন্য ভূমিকা রাখে। v
লেখক: ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক এবং প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ)

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স গ র হক র প রথম আইস স র ব যবহ ত স মরণ য় অনন য

এছাড়াও পড়ুন:

জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত

লক্ষ্মীপুরে আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছে আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সাথে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে আহত হন ওই এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আদালত বর্জন করায় ভোগান্তিতে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। 

জানা গেছে, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামান (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা। 

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, বাদী এবং আসামিদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাদীর ভবনের সামনে থাকা একটি লোহার গেট কেটে নিয়ে এবং গেটের পিলার ভেঙে একটি পিক-আপ গাড়িতে করে রায়পুরের দিকে নিয়ে যায়। রায়পুর বাসাবাড়ি এলাকায় গেলে পিকআপ গাড়িটি টহল পুলিশ আটক করে। পরে গাড়িটি জব্দ ও চালক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। মামলায় বাদী আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থণা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদি আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নয়। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা অন্য আইজীবীদের দ্বারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। 

আদালত সূত্র আরও জানায়, আসামিরা ৯ জুন জামিনের জন্য আবেদন করলে পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্ত সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। 

বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার বন্ধে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামিরা জামিনের শুনানির সুযোগ পাননি। চারদিন তাদের হাজতবাস হয়েছে। ৬ জুন আসামি গ্রেপ্তার হলেও বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা জামিন শুনানির জন্য কোন আইনজীবী পাননি এবং লিগ্যাল এইড অফিসের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিতে অনীহার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিন অযোগ্য ধারায় গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উভয় দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হলো। 

আদালত আসামিদের রিমান্ড না মঞ্জুর করে চারদিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনা করে আসামি কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকা বন্ডে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের জামিন হওয়ায় পর থেকেই আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ঘটনায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিচারকের অপসারণের দাবি জানান।

ঈদের বন্ধ শেষে রবিবার (১৫ জুন) আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবী সমিতি বৈঠক করে ওই আদালতের বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালতের বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিন সকাল থেকে ওই বিচারকের কক্ষে বিচারপ্রার্থীরা এসে উপস্থিত হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে হট্টগোল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এ সময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। 

আহত আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘আইনজীবীরা হট্টগোল করায় বিচারকের নির্দেশে আমি দরজা বন্ধ করতে গেলে আমার ওপর আইনজীবীরা হামলা করে। এতে আমার বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়।’’  

উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান জানান, কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে গিয়ে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানিয়ে দিতে গিয়েছেন। আদালত কর্মচারীরা উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তিনি নিজেও আহত হন।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ