ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আল-আমীন (৩২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

আল-আমীন ভারতের সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুটিয়া সীমান্তে কয়েকজন বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে বিএসএফ। এতে আহত হন আল-আমীন। একপর্যায়ে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যায় বিএসএফ। রাত নয়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর লাশ এখন বিএসএফ ক্যাম্পে আছে।

বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.

বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কী কারণে গুলি করেছে, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না। আল-আমীনের লাশ বর্তমানে বিএসএফ ক্যাম্পে আছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার যে এলাকায় থাকে, সেখানে বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক কাজ করে না। সে জন্য তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। দক্ষিণ পুটিয়া একটি অপরাধপ্রবণ এলাকা। চোরাকারবারের কাজে এলাকাটি ব্যবহার করে অপরাধীরা। আল–আমীন চিনি চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছামিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চোরাকারবারি মনে করে বিএসএফের সদস্যরা আল-আমীনকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে চিকিৎসা দেন। রাতে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মাধ্যমে বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আজ শনিবার এ বিষয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হওয়ার কথা। পতাকা বৈঠকে আল-আমীনের মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা আছে।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার দাবি, সীমান্তের এই জায়গায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর দুই যুবক গুলিতে আহত এবং গত ২২ এপ্রিল মেহেদী হাসান নামের একজন নিহত হন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এসএফ র

এছাড়াও পড়ুন:

কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।

খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।

উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।

উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান
  • স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ দারিদ্র্য নিরসনে অন্যতম বাধা