ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) শাখা ছাত্রদল কমিটি স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। শনিবার রাতে কমিটি স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় দেওয়া হয়। এতে সই করেন দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) শাখার ঘোষিত কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ প্রদান না করা পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে এবং ঘোষিত কমিটির পদবি কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এ নির্দেশনা দেন।
এর আগে, আজ রাতে কমিটি ঘোষণার পরপরই সভাপতিসহ ১৫ নেতা পদত্যাগ করেছেন। এতে আশরাফুল হককে সভাপতি এবং জামিরুল ইসলাম জামিলকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৮ সদস্যের ডুয়েট ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই কমিটি ঘোষণার পরপরই নেতারা গণপদত্যাগ করেন। পদত্যাগকারী নেতাদের অভিযোগ, কমিটিতে যাকে (নাছিরউদ্দিন নাছির) সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তিনি ছাত্রশিবিরের অনুপ্রবেশকারী। তার বিষয়ে আগে থেকে কেন্দ্র এবং তাদের সাংগঠনিক টিমকে জানানো হলেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তাকে পদায়ন করেই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আদর্শগত ভিন্ন মেরুর হওয়ায় তার সঙ্গে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।
তারা আরও বলেন, কমিটিতে বিবাহিত এবং অছাত্র আরাফাত হোসেনকে এক নম্বর সহসভাপতি করা হয়েছে। ইমন মোল্ল্যার বিরুদ্ধে বিগত দিনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সরাসরি সক্রিয় থাকার প্রমাণ রয়েছে। ছাত্রদলের মতো আদর্শিক সংগঠনের একটি ইউনিট কমিটিতে ছাত্রশিবির, অছাত্র আর ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারী থাকলে সেখানে অন্তত আদর্শের রাজনীতি হতে পারে না।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- নতুন কমিটির সভাপতি আশরাফুল হক, সহসভাপতি হাসান আল বান্না, আব্দুল কাদের, শাহ আলম মিয়া, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মো.
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক টিমের সদস্য মিয়া মোহাম্মদ রাসেল বলেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই কমিটি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের যে অভিযোগ উঠেছে সেরকম কোনো দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল কম ট ছ ত রদল র ল ইসল ম গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’