ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের চামোলি জেলায় তুষারধসের ঘটনায় আজ রোববার আরও তিন শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এ নিয়ে নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়াল সাত। এখন পর্যন্ত আরও একজন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। ভারতের সেনাবাহিনী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত শুক্রবার রাজ্যের চামোলি জেলার বদ্রিনাথ শহরের মানা এলাকায় ওই তুষারধসে শ্রমিকদের একটি শিবির চাপা পড়ে। সেখানে শ্রমিকেরা ভারতের সীমান্ত সড়ক সংস্থার (বিআরও) একটি প্রকল্পে কাজ করছিলেন। সে সময় শিবিরে ৫৪ জন শ্রমিক ছিলেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনীশ শ্রীবাস্তব বলেন, সর্বশেষ নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। আইবিইএক্স ব্রিগেডের কমান্ডার ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধারকাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এর আগে আরও এক ব্যক্তি নিখোঁজ বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু জেলা প্রশাসন পরে জানায়, ওই ব্যক্তি হিমাচল প্রদেশে নিজের বাড়িতে নিরাপদে আছেন বলে তাঁর পরিবার নিশ্চিত করেছে।

তুষারধসে আটকা পড়াদের উদ্ধার করে মানা থেকে উত্তরাখন্ডের জোশীমঠ সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের হাসপাতালে আনতে মোট আটটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি সেনাবাহিনীর, দুটি বিমানবাহিনীর আর একটি বেসামরিক। বেসামরিক হেলিকপ্টারটি সেনাবাহিনী ভাড়া করেছিল।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, হিমালয় পর্বতের ওপরের অংশে তুষার ও ভূমিধস সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে শীতকালে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। হিমালয়ে সম্প্রতি উন্নয়ন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে বন উজাড় ও অবকাঠামো নির্মাণের কারণে সেখানে দুর্যোগের শঙ্কা বেড়েছে।

২০২১ সালে উত্তরাখন্ডে হিমবাহের একটি খণ্ড নদীতে পড়ে। এতে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। ওই ঘটনায় প্রায় ১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

২০১৩ সালে ভয়াবহ মৌসুমি বন্যা ও ভূমিধসের কারণে হিমালয়ের এই রাজ্যে প্রায় ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর সেখানকার উন্নয়ন প্রকল্প পর্যালোচনার দাবি উঠেছিল।

আরও পড়ুনভারতে তুষারধসে বরফের নিচে ৪১ শ্রমিক আটকা২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের একটি কমিয়ে জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট শহরের দশানী ট্রাফিক মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। 

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, বিএনপির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি মাওলানা ইউনুস আহমেদ, খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রমিজ উদ্দিন, জেলা ইমাম সমিতির সাধারাণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ আরেফী, জেলা যুব দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, খেলাফত মজলিসের সভাপতি আমিরুল ইসলাম সিদ্দিকী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সভাপতি এস এম সাদ্দাম ও এনসিপির আহ্বায়ক মোর্শেদ আনোয়ার সোহেল প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

আসন খসড়া বাতিলের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে বিক্ষোভ

স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বক্তারা বলেন, ‘‘যদি না বুঝে করে থাকেন তাহলে আমরা দাবি জানালাম, আপনারা আমাদের দাবি মেনে নিয়ে বাগেরহাটের তিন আসনের প্রস্তাব বাতিল করে চারটি আসন পুনর্বহাল করবেন। তবে এটা নিয়ে যদি গড়িমসি করেন, আপনাদের মনগড়া প্রস্তাব জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না।’’ 

বক্তারা আরো বলেন, ‘‘জন্মলগ্ন থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন। একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করাটা খুবই অযৌক্তিক। এই প্রস্তাব দেয়ার আগে জেলার রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেনি। আজকে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। আগামীকালও আমরা মিছিল করব। জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপরও যদি নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তাব থেকে ফিরে না আসে, তাহলে আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।’’

প্রয়োজনে সারা দেশ থেকে বাগেরহাট বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন নেতারা। 

দ্বাদশ সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা বহাল রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পরিবর্তনের মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছে এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে। তবে আগামী ১০ অগাস্টের মধ্যে এ প্রস্তাবের বিষয়ে দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রয়েছে।
 

ঢাকা/শহিদুল/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ