নির্বাচনী আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে মোদির পরিকল্পনা নিয়ে ভারতের উত্তর-দক্ষিণে বিবাদ
Published: 4th, March 2025 GMT
ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় ধনাঢ্য রাজ্যগুলো। তাদের যুক্তি, মোদি সরকারের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র ও জনবহুল উত্তরাঞ্চলের তুলনায় তাদের প্রতিনিধিত্ব কমে যাবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরদার করতে আগামীকাল বুধবার ৪০টির বেশি দলের রাজনীতিবিদদের এক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।
ভারতের দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু দেশটির প্রযুক্তিকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। শিল্পের শক্তিশালী কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত তামিলনাড়ু এবং ২৮টি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল হিসেবে পরিচিত তেলেঙ্গানা। ভারতের মোট জিডিপির ৩০ শতাংশ আসে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যে থেকে।
মোদির সীমানা নির্ধারণ বা নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে স্ট্যালিন বলেছেন, ‘এই বিষয়টি আমাদের প্রতিনিধিত্ব কমাবে এবং আমাদের কণ্ঠস্বরকে চূর্ণ করার মাধ্যমে বিপদ ডেকে আনবে।’
স্ট্যালিন বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর কোনোটিই মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নিয়ন্ত্রিত নয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করে এখন শাস্তি পাচ্ছে দক্ষিণের এসব রাজ৵।
ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে তাদের একটি মিত্র দল প্রতিবেশী বিহার রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। এই দুটি রাজ্য ভারতের সবচেয়ে দরিদ্রতম রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ২৬ শতাংশের বসবাস ভারতে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ।
সংবিধান অনুসারে, প্রতিটি জাতীয় জনশুমারির পরে ভারতকে লোকসভা আসনের সীমানা নির্ধারণ করতে হয়।
কিন্তু মহামারির কারণে ভারত ২০২১ সালের জনশুমারি করতে পারেনি। বারবার দাবি সত্ত্বেও মোদি সরকার এখনো আনুমানিক ১৪০ কোটি জনসংখ্যার গণনার কাজ শুরু করেনি। ২০১১ সালের জনশুমারিতে ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটি। কিন্তু লোকসভায় নির্বাচিত আসনের সংখ্যা ৫৪৩টিই রয়ে গেছে। গত বছর উদ্বোধন করা নতুন সংসদ ভবনে ৮৮৮ আসন রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
তেলেঙ্গানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাভান্ত রেড্ডি গত মাসের শেষের দিকে বলেছিলেন, ‘কেবল জনসংখ্যার আকার সীমানা নির্ধারণের মাপকাঠি হতে পারে না।’ তিনি বলেছিলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য জনশুমারির পরে একটি নতুন অনুপাত করা উচিত।
রেড্ডি আরও বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আমাদের (দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো) শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। তাতে জনশুমারি বৈষম্য তৈরি করবে।’
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তাদের প্রতিনিধিত্ব হারাবে না। মোদি সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, সীমানা নির্ধারণের পরে আনুপাতিক হারে দক্ষিণাঞ্চলীয় কোনো রাজ্যের একটিও আসন কমানো হবে না।
তবে এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) মন্তব্য করেছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।
স্ট্যালিনের ডাকা আগামীকাল বুধবারের সভায় দক্ষিণাঞ্চলীয় অনেক নেতা যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিজেপি জানিয়েছে, তারা এ সভায় যোগ দেবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আসন র স ম ন জনস খ য র জনশ ম র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৩ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের বিক্ষোভ
সাতক্ষীরা-৩ (কালীগঞ্জ ও আশাশুনি) সংসদীয় আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দীনকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে মনোনয়নবঞ্চিত দলটির অপর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ড্যাব নেতা ডা. শহিদুল আলমের সমর্থকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার হাসপাতাল মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলটি সানি মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
মনোনয়ন না পেয়ে হাজী ইয়াছিনের সমর্থকদের মহাসড়কে বিক্ষোভ
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, বিএনপি কর্মী এসএম হাফিজুর রহমান বাবু।
বক্তারা সাতক্ষীরা-৩ আসনের জন্য ঘোষিত কাজী আলাউদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল করে ডা. শহিদুল আলমকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ