গাজা পুনর্গঠনে আবারও জরুরি বৈঠকে বসেছেন আরব নেতারা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে মিসরের কায়রোয় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে মূল আলোচ্যসূচি ছিল ফিলিস্তিনি উপত্যকার পুনর্গঠন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের পরিবর্তে আরব, মুসলিম ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা গাজা পরিচালনা করবে– এমন একটি পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা। খবর রয়টার্সের।
ইসরায়েলের ১৫ মাসের আগ্রাসনে ভেঙে পড়া গাজা কে পরিচালনা করবে, তা একটি বড় প্রশ্ন। হামাস বলেছে, বাইরের পক্ষগুলোর চাপিয়ে দেওয়া যে কোনো সমাধান তারা প্রত্যাখ্যান করে।
মিসরের নেতৃত্বে এই আলোচনায় জর্ডান, সিরিয়া, আরব লিগ ও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসির সদস্য দেশগুলো অংশগ্রহণ করে। আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়, গাজার প্রাথমিক পুনরুদ্ধার, পরিকাঠামো পুনর্নির্মাণ, বসবাসযোগ্য অবকাঠামো গঠন, সেবা প্রদান এবং দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের রাজনৈতিক পথ উন্মোচনের সম্ভাব্য পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অর্থায়ন নিয়েও আলোচনা হয়।
রয়টার্সের দেখা একটি খসড়া অনুসারে, এটি গাজার হামাস পরিচালিত সরকারকে অনির্দিষ্ট অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য প্রতিস্থাপন করবে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস যদি দৃশ্যপটের বাইরে থাকে, তবে গাজার সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের কোনো আরবসত্তার বিরোধিতা করার সম্ভাবনা কম।
মিসর গাজার পুনর্গঠনের জন্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের একটি পাঁচ বছরের পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে নতুন আবাসন, একটি বাণিজ্যিক বন্দর এবং একটি বিমানবন্দর তৈরির বিষয়টি থাকবে।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর করতে ইসরায়েল রাজি বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’য়ার। তবে তার আগে শর্ত হলো, গাজাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ এবং বন্দিদের ফিরিয়ে দিতে হবে।
সা’য়ার বলেন, আমরা গাজাকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্রীকরণ, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদকে শেষ করা এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছি। যদি তারা এতে রাজি হয়, তবে আমরা আগামীকালই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করতে পারি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?