ফরিদপুরের সালথায় নারী দিবস উপলক্ষে নেতাদের খামছাড়া চিঠি দেওয়ায় সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন করে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওয়ালি উজ জামান নামের কর্মী সালথা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা ডলিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে সংশোধন হতে বলেন। সেটি সম্ভব না হলে তাঁকে সালথা ছাড়তে বলেন।
স্থানীয়রা জানান, ওয়ালি উজ জামান উপজেলা জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। সালথা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্কয়ার প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
ফেরদৌস আরা বলেন, নারী দিবস উপলক্ষে রাজনীতিকদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। লোকবল সংকটে জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতার নামে চিঠি ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী নিতাইয়ের মাধ্যমে ওয়ালি উজ জামানের দোকানে পাঠানো হয়। ব্যস্ততার কারণে চিঠিটি খামে দেওয়া হয়নি। খামছাড়া চিঠি পেয়ে ওয়ালি উজ জামান তাৎক্ষণিক নিতাইকে হেনস্তা করেন। পরে আমাকে ফোন দিয়ে ধমকান।
জামায়াতের ওই কর্মীর কেন খামছাড়া চিঠি দেওয়া হয়েছে– উচ্চ স্বরে জানতে চান। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, কোন জিনিস কীভাবে পাঠাতে হয়, বুঝতে পারেন না? নেতাদের চিঠি খামে ভরে দিতে হয়। খামের টাকা নাই? বরাদ্দের টাকা যায় কোথায়? বিল-ভাউচার এতদিন যা খাইছেন, এখন বুঝেশুনে খাইয়েন।
ফেরদৌস আরা এসব কেন বলছেন– জানতে চাইলে ওয়ালি উজ জামান বলেন, ‘যা বলছি, ভালো করেই বলছি। ভদ্রলোকের মতো চিঠি পাঠাবেন। আপনি ইউএনওকে অভিযোগ করতে পারেন।’
কর্মকর্তার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি সংশোধন হয়ে যান। আওয়ামী লীগের সময় অনেক খাইছেন। আওয়ামী লীগের ভয় দেখিয়ে অনেক মানুষকে ল্যাংটা করেছেন। চেয়ারম্যানদেরও ল্যাংটা করেছেন। এখন ভালো হয়ে যান। সম্ভব না হলে সালথা ছাড়েন।’ তখন ফেরদৌস আরা জানান, তিনি ডিপার্টমেন্টের ইচ্ছায় সালথা আছেন। এবার জামায়াত কর্মী বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের; এটি আপনার বাজানের না।’
জানতে চাইলে ওয়ালি উজ জামান সমকালকে বলেন, ‘আমি কোনো দলের নই। উপজেলা জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারির খামছাড়া চিঠি দোকানে দিতে আসায় সচেতন নাগরিক হিসেবে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। ধমক দিইনি। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনিই শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছেন। তা ছাড়া ফেরদৌস আরা আওয়ামী লীগের দোসর। বিগত আমলে ক্ষমতা দেখিয়ে প্রতিদিন দুপুর ২টার পর অফিস করতেন।’
জামায়াতের উপজেলা আমির আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ইউএনও বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। ধমকাননি, তিনি জানতে চেয়েছিলেন। তার পরও বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব। তবে চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ভদ্রতা থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
সালথার ইউএনও আনিছুর রহমান বালি জানান, মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব ষয়ট আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা
শ্রমিক ও মালিক উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শ্রম অধিকার এবং শ্রমিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হবে সংশোধিত আইনে।
আগামী জুনে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে বৈঠক শেষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার উপরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান করা হবে। মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস, ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক, রিপোর্টার, চিত্রগ্রাহক নির্বাচনপূর্বক অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। আগামীকাল সকালে র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। মেহনতি মানুষের অবদান তুলে ধরার জন্য ডকুমেন্টারি ও টিভিসি প্রচার করা হবে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। মহান মে দিবসের প্রতিপাদ্য 'শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এ দেশ নতুন করে' ক্ষুদে বার্তা সকল মোবাইল ফোন গ্রাহকের নিকট প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।