৮ পর্যটককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
Published: 10th, March 2025 GMT
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আট পর্যটককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৯ মার্চ) রাতে উপজেলার বোয়ালখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঠালতলী (চিটিং টিলা) এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (১০ মার্চ) দীঘিনালা থানার ওসি মো. জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ওসি জাকারিয়া জানান, রাজশাহীর পুঠিয়া থানার বাসিন্দা মো.
আরো পড়ুন:
কুমারখালীতে ২ এএসআই হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
ছাত্র আন্দোলনে নিহত তানজিন তিশার সহকারীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন
তিনি আরো জানান, পর্যটকদের সারা রাত আটকে রেখে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। তারা বিভিন্ন একাউন্টের মাধ্যমে সাত লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। পরে তারা অপহৃতদের ছেড়ে দেয়। খবর পেয়ে গতকাল রবিবার রাতে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু হয়। পর্যটকদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেলাল, আজিবুর রহমান, সহিদুল ও সুফিয়া বেগমকে বোয়ালখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কাঠালতলীসহ (সিটিং টিলা) বিভিন্ন জায়গায় থেকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনকে আসামি করে অপহরণের শিকার মো. খলিলুর রহমান বাদী হয়ে দীঘিনালা থানায় মামলা করেন। আজ সোমবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ অপহরণ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস