জামালপুরে আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 11th, March 2025 GMT
জামালপুরে আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বেলা ১১টা থেকে আধা ঘণ্টা জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। এতে আইনজীবী ও তাঁদের সহকারীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিশাদ রেজওয়ান, আইনজীবী মো.
বক্তারা বলেন, আইনজীবীরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে। তাঁরা সব সময় ধর্ষণকারীর বিপক্ষে এবং ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন। কিন্তু গতকালের ঘটনার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামধারী কতিপয় ছাত্র দায়ী। তাঁরা পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা নিয়ে আইনজীবীদের ওপর হামলা চালান। কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী আহত হয়েছেন। ৫০ বছরের মধ্যে এই আদালত অঙ্গনে কেউ এ ধরনের অরাজকতা করতে পারেননি। কিন্তু ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী আদালত অঙ্গনে হামলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। আবারও যদি আদালত অঙ্গনে এসে তাঁরা এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখানোর চেষ্টা করেন, তাহলে এখান থেকে বের হয়ে যেতে পারবেন না। আবারও যদি কেউ আইনজীবীদের ওপর হামলা করার চেষ্টাও করেন, শক্ত হাতে ওই সব সন্ত্রাসীকে প্রতিহত করা হবে।
বক্তারা আরও বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে বহিরাগতদের মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হবে না। কেউ গেট দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে তাঁদের আইনজীবী ও তাঁদের সহকারীরা জীবন দিয়ে হলেও প্রতিহত করবেন। আইনজীবীদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে পারবেন না—এমন দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে জামালপুর আদালত প্রাঙ্গণে ‘সচেতন ছাত্র–জনতার’ ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু করেন ২০–৩০ জন ছাত্র। বেলা দেড়টার দিকে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে যান। এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে তাঁদের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে দুই দিন দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকার পর আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এটি দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এর পর থেকে আগের মতো দর্শনার্থীরা রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি ঘুরে দেখতে পারছেন।
রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ১১ জুন থেকে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীরা ফিরে গিয়েছেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও সুধীসমাজের সঙ্গে কথা বলে এটিকে চালু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আজ সকাল ১০টার দিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) শেখ কামাল হোসেন এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম উপস্থিত থেকে কাছারি বাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ব্যাপারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আজ শুক্রবার বিকেলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে সে অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে ৮ জুন মোটরসাইকেল পার্কিংকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে এক দর্শনার্থীকে আটকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দর্শনার্থী মো. শাহনেওয়াজ কাস্টোডিয়ানসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় ওই দিন রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এদিকে এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে ‘শাহজাদপুরের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল শাহজাদপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা চালিয়ে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ানের কার্যালয়সহ মিলনায়তনের দরজা-জানালা ও আসবাব ভাঙচুর করেন। এ সময় বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুর রহমান ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এমন অবস্থায় বুধবার সকাল থেকে কাছারি বাড়িতে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিল।
হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর বুধবার দুপুরের দিকে কাছারি বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ১২ জনের নামে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।