প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে কলোরেক্টাল ক্যানসার সহজেই নিরাময়যোগ্য
Published: 11th, March 2025 GMT
অধিকাংশ ক্যানসার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নিরাময়যোগ্য। আর কলোরেক্টাল ক্যানসার জটিল বা ব্যয়বহুল নয়। তাই এ ক্যানসারে বাঁচার হার খুবই বেশি। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে এ ক্যানসার সহজে নিরাময়যোগ্য।
গত শনিবার (৮ মার্চ) এসকেএফ অনকোলজির আয়োজনে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় এ কথা উঠে আসে। অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
মার্চ মাসকে ‘কলোরেক্টাল ক্যানসার সচেতনতার মাস’ হিসেবে পালন করা হয়। এর উদ্দেশ্য চারটি—সচেতনতাসহ এ ক্যানসার নিয়ে যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণা দূরীকরণ; তাড়াতাড়ি শনাক্তকরণ; ডায়াগনসিসের গুরুত্ব ছড়িয়ে দেওয়া এবং রোগীদের মানসিক-নৈতিক ও মেডিকেল সহায়তা নিশ্চিত করা—অনুষ্ঠানের শুরুতেই কথাগুলো বলছিলেন উপস্থাপক নাসিহা তাহসিন।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অনকোলজিস্ট ডা.
বাংলাদেশে কলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হারটা কেমন? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. এ টি এম কামরুল হাসান বলেন, ‘কোলন এবং রেক্টাল—দুটি অঙ্গকে একত্রে বলা হয় কলোরেক্টাল। সহজে পাকস্থলী, পায়ুপথ, ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্র মিলে হয় কলোরেক্টাল। ক্যানসারে আক্রান্তের তালিকায় বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কলোরেক্টাল ক্যানসার, যা নারী-পুরুষ উভয়েরই হয়। বিশ্বে মৃত্যুর তালিকায় ক্যানসার দ্বিতীয় আর বাংলাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় তৃতীয়। বিশ্বে এ ধরনের ক্যানসার ৬০ বছর বয়সোর্ধ্বদের হয়ে থাকলেও বাংলাদেশে ৪০ বছরের কম বয়সীদেরও এটি হচ্ছে। যা আমাদের জন্য অশনিসংকেত। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করা জরুরি।’
কলোরেক্টাল ক্যানসারের লক্ষণ প্রসঙ্গে ডা. এ টি এম কামরুল হাসান বলেন, ‘এর উপসর্গগুলো সেভাবে বোঝা যায় না। সে জন্যই অধিকাংশ রোগী অ্যাডভান্স পর্যায়ে আসেন। সাধারণত কোলনের ডান দিকে যদি অস্বাভাবিক কোনো গ্রোথ হয়, সে ক্ষেত্রে উপসর্গ হবে কোলনে অস্বস্তিকর ব্যথা, পেটে ব্যথা, ওজন ও রক্ত কমে যাওয়া, খাওয়ায় অরুচি ইত্যাদি। আর যদি কোলনের বাঁ দিকে হয়, সে ক্ষেত্রে পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়, এর সঙ্গে রক্ত যায় ইত্যাদি। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সাধারণত আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়ে টয়লেটে যাই। এ সময় যদি পরিবর্তিত হতে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে, কোলনে কোনো সমস্যা দেখা গেছে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’
বাংলাদেশে ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা ও চিকিৎসাপদ্ধতি এবং রোগ নির্ণয়ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন ডা. এ টি এম কামরুল হাসানউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?