সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জামায়াত কর্মীসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিমাড়ী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আজিজুল সরদার ও বিএনপি কর্মী আক্তার ফারুকের সমর্থকদের এ সংঘর্ষ হয়। এতে আহতরা হলেন- আক্তার ফারুক, শহিদুল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, মনজুর হোসেন, সফিকুল ইসলাম, খোকন পাকানি, হেলাল, মাসুদ, আল মামুন, জামায়াত কর্মী তহুর মোল্যা, মিজানুর রহমান ও আব্দুর রহমান। আহতদের মধ্যে সাতজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিবাদমান দু’পক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। সম্প্রতি আক্তার পক্ষের কয়েক তরুণকে মাদকাসক্ত বলে দাবি করে আজিজুলের লোকজন। এ ঘটনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে স্থানীয় বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় আজিজুলের লোকজন। এ সময় আক্তার কিছু কর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তাকে মারধর করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আক্তার সমর্থকরা সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায় আজিজুলের লোকজনের ওপর। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা জানায় নিকটাত্মীয় হওয়ায় আহত জামায়াত কর্মীরা বিএনপি নেতা আজিজুলের পক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে আক্তার ফারুক জানান, দলীয় অফিস বন্ধ করতে বাধা দেওয়ায় কয়েক কর্মীসহ তাঁর ওপর জামায়াত কর্মীদের নিয়ে হামলা চালায় আজিজুল, জহুর মোল্যা, আলআমিন ও রবিউল। পরে তাঁর সমর্থকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। নিজেসহ তার ১২ কর্মী আহত হওয়ার দাবি করেন ফারুক।

আজিজুল সরদারের ভাষ্য–তাঁর লোকজনের ওপর আক্তার ফারুক হামলা করায় এলাকাবাসী সমবেত হয়ে পাল্টা জবাব দেয়। এ ঘটনায় তার পক্ষের ১৫ জন আহত হওয়ার দাবি করে তিনি আরও বলেন, জামায়াতের কর্মী না, বরং তার আত্মীয় হওয়ায় অপর সংগঠনের রাজনীতিতে জড়িত কয়েকজন আহত হয়েছে।

শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনো পক্ষই এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি উল্লেখ করে তিনি জানান, দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ আহত জ ম য় ত কর ম আজ জ ল র র ল কজন স ঘর ষ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল