বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের। শুরু থেকে অনিয়মের অভিযোগ ওঠা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি এখনও হাঁটছে সে পথেই। ২০২০ সালে শুরু হওয়া পাঁচ বছরের প্রকল্পে এরই মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে তিন পরিচালক বদল করা হলেও শৃঙ্খলা ফেরেনি। 

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে চতুর্থবারের মতো পরিচালক বদল করা হয়। নতুন নিয়োগ পান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের কৃষি প্রকৌশলী মঞ্জুর-উল-আলম। পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি চেয়ারে বসেই তুলকালাম কাণ্ড করে বসেন। কোনো সরকারি আদেশ ছাড়াই প্রকল্পের দুই উপপ্রকল্প পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে অফিসছাড়া করেন। 

২০২০ সালে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প পরিচালক ছিলেন বেনজীর আলম। সেই সময় থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তখন তাঁকে উল্টো পদোন্নতি দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক করা হয়। এর মাস ছয়েক পর নতুন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পান তারিক মাহমুদুল ইসলাম। পরে তাঁকে সরিয়ে মোহাম্মদ সফিউজ্জামানকে প্রকল্প পরিচালক করা হয়। গত ডিসেম্বরে তারিক মাহমুদুলসহ সংশ্লিষ্ট আট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়। 

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ সফিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হন কৃষি প্রকৌশলী মঞ্জুর-উল-আলম। পরদিন তিনি চেয়ারে বসেই উপপ্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম শেখ, উপপ্রকল্প পরিচালক আলতাফুন নাহার, সিনিয়র মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন অফিসার মুহাম্মদ কুরবান আলী, মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন অফিসার আফছার আহমেদ রাজিন ও মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন অফিসার জুলফিকার আলী ভুট্টোর কক্ষের নামফলক খুলে ফেলেন। অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তাদের কক্ষের চাবি নিয়ে অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রকল্প পরিচালক। 

এদিকে পাঁচ কর্মকর্তাকে অফিস কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার কয়েক দিন পর দুই উপপ্রকল্প পরিচালকের কক্ষে নতুন দু’জনকে বসানো হয়েছে। অথচ দুই প্রকল্প পরিচালককে এখনও নিয়ম অনুযায়ী বদলি কিংবা অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। আর নতুন যে দুই কর্মকর্তা অফিস করছেন, তারাও প্রকল্পে নিয়োগের কোনো নির্দেশনা পাননি।

এ বিষয়ে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের পরিচালক মঞ্জুর-উল-আলম বলেন, ‘আমি কাউকে জোর করে রুম থেকে বের করিনি। কর্মকর্তাদের বলেছি, অফিস শেষে চাবি যেন আমার কাছে রেখে যান। কারণ, হঠাৎ করে কোনো কাগজপত্রের দরকার হতে পারে। এ ছাড়া সব কক্ষেই নতুন নামফলক লাগানো হবে। ফলে পুরোনো নামফলক খুলে নেওয়া হয়েছে।’ 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খ ম রব ড় য ন ত র ক করণ প রকল প কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত