কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকারকে পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁকে ভেড়ামারা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

অভিযুক্ত বোরহান উদ্দিন সরকার দৌলতপুর উপজেলার সাবরেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত। তবে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে ভেড়ামারা সাবরেজিস্ট্রার হিসাবেও কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার ছিল সেখানে তাঁর প্রথম কর্মদিবস।

দৌলতপুর উপজেলার দলিললেখক রফিকুল ইসলাম বলেন, বোরহান উদ্দিন ত্রুটিপূর্ণ দলিলগুলো টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রি করে দেন বলে অভিযোগ আছে। দৌলতপুরেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা থেকে সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিনকে তাঁর কার্যালয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ছাত্র-জনতা, ভুক্তভোগীরা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় তাঁরা সাবরেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সহকারীকে খুঁজতে থাকেন। বোরহান উদ্দিন ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে দলিলে ভুলত্রুটি মার্জনা সাপেক্ষে রেজিস্ট্রি করার নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাই তিনি ব্যক্তিগত সহকারীকে টাকাসহ পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।

বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযোগ করেন, সাবরেজিস্ট্রারের কাজ সাধারণত বেলা তিনটা পর্যন্ত। কিন্তু তিনি ত্রুটিপূর্ণ কিছু দলিল রেখে দিয়েছেন ইফতারির পর কাজ করার জন্য। যে দলিলগুলো রেজিস্ট্রি করেছেন, সেখানেও নামের ভুল বাবদ তাঁর সহকারীকে দিয়ে ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন বলেন, যদি কেউ ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ দিতে পারেন, তবে তিনি তা মেনে নেবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কোনো ঘুষ–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নই। জনগণের উপকার করতে গিয়ে আমি ফেঁসে গেছি। সে আমার সহকারী নয়; বরং আত্মীয়। তার মোবাইল নম্বর আমার কাছে নেই।’ নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘টেনশনে আমার কিছু মনে পড়ছে না।’

ভেড়ামারার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উপজেলার পরানখালি এলাকার বাসিন্দা রাকিব হোসেন তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁর এক স্বজনের দলিলে নাম ভুলের কারণে সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিনের সহকারী ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ–সংক্রান্ত মুঠোফোনে কল রেকর্ড আছে। কিন্তু সেই সহকারী টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন। সহকারীকে ফোন দিতে বললে সাবরেজিস্ট্রার বলেন, তাঁর ফোন নম্বর জানা নেই। এমনকি সহকারীর নামও তিনি বলতে নারাজ।

খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন ও ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শহীদুল ইসলাম পুলিশ নিয়ে গিয়ে সাবরেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকারকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহক র ক র সহক র অবর দ ধ উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবকে এখনও দেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে মুখ খুলেছেন তামিম ইকবাল। সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারকা খ্যাতি বা ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এই দুই তারকার দূরত্বের পেছনে অন্য কারণ কাজ করেছে। তবে সেই দূরত্ব ঘোচানোর জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও আক্ষেপ করেছেন তিনি।

তামিম বলেন, ‘অনেকে বলে, কে কার চেয়ে সেরা। কার এনডোর্সমেন্ট বেশি। এগুলো কিছুই আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করেনি। আমি সব সময় বলেছি, বাংলাদেশের স্পোর্টসে সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব। আমি নিজেই যখন এটা বলি, তখন তারকা খ্যাতি সম্পর্কের অবনতির কারণ হতে পারে না।’

তিনি জানান, বিসিবির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলে সাকিব ও তার মধ্যকার দূরত্ব কমত। ‘তারা আলাদাভাবে কথা বলেছেন, কিন্তু দু’জনকে একসঙ্গে বসিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেননি’, বলেন তামিম।

তামিম আরও বলেন, অধিনায়ক থাকার সময় সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে তিনি নিজেই চেষ্টা করেছেন। যদিও সে চেষ্টা তখন সফল হয়নি, ভবিষ্যতে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা এখনও তিনি দেখেন।

এমনকি নিজের অসুস্থতার সময় সাকিবের সহানুভূতিশীল আচরণের কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করেন তামিম। বলেন, ‘আমার অসুস্থতার সময়ে সাকিব তার ফেসবুকে দোয়ার অনুরোধ করেছিল। তার বাবা-মা হাসপাতালে আমাকে দেখতে গিয়েছেন। আমরা দু’জনই পরিণত। সামনাসামনি হলে এবং নিজেদের মধ্যে কথা হলে সম্পর্ক উন্নত হতে পারে।’

তামিমের এই মন্তব্যেই বোঝা যায়, ব্যক্তিগত বিরোধ থাকলেও তামিম এখনও চান সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কটা সুস্থতায় ফিরুক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ