রমজান একটি আধ্যাত্মিক মাস। এই মাসের রীতিনীতির মধ্যে শিশুদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে রমজান তাদের কাছে আরও অর্থবহ করে তোলা যেতে পারে। যদিও রোজা রাখা শিশুদের জন্য চ্যালেঞ্জিং, তবে বাবা-মায়ের কিছু কৌশল এবং পারিবারিক ঐতিহ্যের উষ্ণতা তাদের অভিজ্ঞতাকে সুন্দর ও মনে রাখার মতো করে তুলতে পারে।
রোজা রাখার জন্য প্রস্তুতি ও অভ্যাস গঠন গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য রমজানে রোজা রাখা জরুরি নয়, তবে পারিবারিকভাবে সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রোজার প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করা যায়, যাতে তারা পরবর্তী সময়ে রোজা রাখতে প্রস্তুত থাকে। বাবা-মায়েদের উচিত তাদের সন্তানের শারীরিক সক্ষমতা, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তারা কতক্ষণ রোজা রাখবে তা ঠিক করে দেওয়া।
সাহরি প্রশিক্ষণ
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.
তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন, যা শিশুর রোজা রাখার সময় বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে:
১. সাহরি খাবার: সাহরির খাবার অবশ্যই ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হতে হবে। যেমন পূর্ণ শস্য, শিম, ফল, সবজি, চর্বিহীন মাংস, ডিম ও দুগ্ধজাত পণ্য।
২. খাবারে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলতে উৎসাহিত করা উচিত।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান: অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং রোজা না-রাখার সময়ও পর্যাপ্ত পানি পান করতে দিতে হবে।
৪. অতিরিক্ত খাবার বর্জন: কারণ এটি হজমের সমস্যা এবং অস্বস্তি ভাব হতে পারে। শিশুকে ছোট ছোট খাবার খেতে উৎসাহিত করুন।
আরও পড়ুনরমজানে অলসতা ভর করার কারণ১২ মার্চ ২০২৫শিশুদের উৎসাহিত করার উপায়
বাবা-মায়ের উচিত রমজান মাসে কিছু ইতিবাচক পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের উৎসাহিত করা। এখানে কয়েকটি ‘প্রোডাকটিভ মুসলিম’ ও ‘নাসা ফাউন্ডেশন’র ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া হয়েছে:
১. রমজানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা: রমজান মাস শুরুর আগে শিশুদের রমজান সম্পর্কে সচেতন করা উচিত। রমজান বড়দের রোজার মাস নয়, শিশুদের জন্যও রমজানের গভীরতা ও পবিত্রতা শেখানোর বহু কিছু আছে। যেমন: আল্লাহর প্রতি ভয়, দরিদ্রদের কষ্ট বোঝা এবং ক্ষুধায় ধৈর্য ধারণ করার মতো বিষয়গুলো তাদের পরিচিত করানো যায়।
২. বাড়ি সাজানো: বাড়ির মধ্যে রমজান মাসের পরিবেশ তৈরি করা শিশুদের জন্য রমজানকে আরও আনন্দময় করে তুলতে পারে। ফানুস, রমজান পোস্টার এবং চাঁদ-তারা খচিত স্টিকার ব্যবহার করা যায়। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে রং-বেরঙের কাগজ কেটে সাজানোর আয়োজন করলে তারা নিজেদের রমজানের সঙ্গে আরও যুক্ত ভাববে।
আরও পড়ুনরমজানের মাঝের ১০ দিনে করণীয়১৩ মার্চ ২০২৫৩. একসঙ্গে খাবার প্রস্তুত করা: শিশুদের রমজান মাসের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হলো তাদের সাহরি ও ইফতার প্রস্তুতিতে যুক্ত করা। শিশুরা টেবিল সাজাতে সাহায্য করতে পারে, অথবা তাদের স্ন্যাক্স বা মিষ্টান্ন, শরবত তৈরি করতে দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিবেশীদের বাসায় ইফতার পৌঁছাতেও তাকে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
৪. রমজান ভিত্তিক কার্যক্রম: রমজানে শিশুদের জন্য বিভিন্ন আনন্দময় কার্যক্রমের সুযোগ করে দেওয়া যায়। যেমন, রমজান ক্যালেন্ডার তৈরি করা, যেখানে প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ থাকবে। বা কোরআন থেকে একটি আয়াত পড়া অথবা নবীদের রোজা রাখার গল্প, অথবা নবী যুগের শিশুদের প্রথম রোজা রাখার ঘটনা শোনানো।
৫. রমজান মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়া: রমজান মাসকে ব্যবহার করে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং দানশীলতা শেখানো, পথে মুসাফিরকে খাবার বিতরণ বা অর্থ ও জামা কাপড় দান করা ইত্যাদি। এ জন্য তাকে ছোট কোনো উপহার দেওয়া যায়।
সূত্র: আলজাজিরা ডট নেট
আরও পড়ুনসাহরির যে ৭টি বিধান মনে রাখা জরুরি১২ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ শ দ র জন য রমজ ন ম স রমজ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতি নয়, সংগঠক হিসেবেই ভূমিকা রাখতে চান তামিম
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল সম্প্রতি চট্টগ্রামে বিএনপির ‘তারুণ্য উৎসব’ মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন। এতে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল যে, তিনি রাজনীতিতে নামতে পারেন। সমকালের বিশেষ সাক্ষাৎকারে সেই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
তামিম সাফ জানিয়েছেন, ‘আমার একদমই রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা নেই। তবে রাজনীতিকে আমি খারাপভাবে দেখি না। আমি রাজনীতিতে যোগ্যতা বা আগ্রহ অনুভব করছি না।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, চট্টগ্রামে তিনি ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়ে স্টেজে যোগ দিয়েছিলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়।
রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তামিম বলেন, ‘যেখানে খেলোয়াড় এবং ক্রীড়া সংগঠকরা থাকবেন, সেখানে আমি আপত্তি করব না। তবে যে কমিটি হয়েছে, তাতে আমার নাম নেই। ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে কোনো কমিটিতে থাকতে পারি, বা না-ও থাকতে পারি। সুবিধা-অসুবিধা দুটোই ভাবছি।’
তিনি স্পষ্টভাবেই জানান, ক্রীড়া উন্নয়নে রাজনীতিকদের মাঝে স্পোর্টস বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ হওয়া উচিত। ‘দেশের স্পোর্টসের স্বার্থে এমন রাজনৈতিক নেতা আসবেন, যিনি খেলোয়াড়দের কারণে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি বলব না, আমিই সেই সঠিক মানুষ। তারা যাকে সঠিক মনে করবেন, তাঁকে খুঁজে নেবেন। আমি ওটার জন্য অপেক্ষা করব।’
তবে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসবেন কি না জানতে চাইলে, তামিম বলেন: ‘এটি বলা কঠিন। ২০ বছর পরে গিয়ে কী হবে, কেউ বলতে পারে না। তবে এ মুহূর্তে রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না। আমি এখন রাজনীতি করি না, তাই কোনো নির্দিষ্ট দলের কথা বলব না। আমার কাছে মনে হয়, যারাই আসুক, তারা স্পোর্টসের লোকদের দিয়ে স্পোর্টস পরিচালনা করবেন।’