কুরআনের আলোকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে : সাদ্দাম
Published: 18th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম হাফেজ ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, হাফেজ হওয়া কোনো চাট্টিখানি ব্যাপার না। আল্লাহ যাকে মনোনীত করেছেন তিনিই হাফেজ হয়েছেন।
আপনাদের শুধু কোরআন তেলাওয়াত করলে চলবে না,কোরআন বুঝে তেলাওয়াত করার উপর তাগিদ দিয়েছেন। কোরআন তেলাওয়াত বা ঝাড়ফুক এর মধ্যে রাখলে চলবে না। এই কোরআন দিয়ে সমাজ, সংস্কৃতি তথা রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য তিনি বলেছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও হাফেজে কুরআন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে চাষাড়ায় ডাক বাংলোতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আজকে ইসলামি ছাত্র শিবির যে আয়োজন করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। এজাতীয় সংবর্ধনায় ফ্যাসিবাদের আমলে কোরআনকে প্রমোট করা হয়নি,বরং কোরআনকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের ঐ অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছে। ইসলামী ছাত্র শিবির বাংলাদেশের জন্য সম্পদ তৈরী করতে চায়।তাই দেশ,জাতি এবং উম্মাহ'র কল্যান তৈরী করবে, সমৃদ্ধির একটি পথ দেখাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মুহাম্মদ আবদুল জব্বার।
নাঃগঞ্জ মহানগর ছাত্র শিবিরের সভাপতি হাফেজ ইসমাইলের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি অমিত হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সাবেক সভাপতি জনাব অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন (এপিপি) এবং সাবেক নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসরাফিল হোসাইন (এপিপি), মহানগর দপ্তর সম্পাদক আমজাদ হোসেন, মহানগর অর্থ সম্পাদক রায়হান বিন রফিক, মহানগর শিক্ষা সম্পাদক কামরুল ইসলাম, মহানগর স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক আল হেলাল, মহানগর সাহিত্য সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, মহানগর প্রচার সম্পাদক হুজ্জাতুল ইসলাম সহ অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন ইসল ম ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।