দেশে স্বৈরশাসন উত্থানের জন্য কি শুধু সংবিধান দায়ী
Published: 18th, March 2025 GMT
বাংলাদেশে বারবার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের উত্থানের কারণ অনুসন্ধান এবং তার একটি বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনা খুবই দরকার। রোগ যথাযথভাবে নিরূপিত না হলে রোগের চিকিৎসাও যথাযথ হয় না।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর ছাত্রনেতৃত্ব সংবিধান পুনর্লিখনসহ যেভাবে দাবিদাওয়া উপস্থাপন করছে, তাতে কর্তৃত্ববাদ উত্থানের সব দায় বিদ্যমান সংবিধানের ওপর চাপানো হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নসহ দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র ঘোষণার দাবিতে তারা খুব সোচ্চার।
১৯৭১ সালে এক সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার প্রতিফলনসহ গণতন্ত্রকে অন্যতম মূলনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়।
সংবিধানের প্রস্তাবনা ও মূলনীতিতে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রাধান্য এবং পুরো সাংবিধানিক কাঠামো গণতান্ত্রিক হলেও বারবার এখানে স্বৈরতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী শাসন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন সময় সংবিধানে নানা সংশোধন এনেছে যা সংবিধানের মূল চরিত্রকে বিকৃত করেছে এবং নানান বিতর্ক তৈরি করেছে।
এরপরও যে বিষয় খতিয়ে দেখা দরকার তা হলো, বারবার কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রত্যাবর্তনের দায় কি বর্তমান সংবিধানের নাকি এর বীজ লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোথাও? এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টি ফেলা। রাজনীতির প্রাণভোমরা হলো রাজনৈতিক দল। সমাজ ও রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা বিকাশের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন দলে গণতন্ত্রের চর্চা। দলে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে সমাজ ও রাষ্ট্রে তার প্রতিফলন অবশ্যই ঘটবে।
আমাদের দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতার পর কয়েক যুগ ধরে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। অগণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি ও নেতৃত্বের বংশানুক্রমিক ধারা চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। ফলে আদর্শের জায়গা দখল করে নিয়েছে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি। টাকা ও পেশিশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনীতির নিয়ামক শক্তি। নেতা নির্বাচনের বিষয়টি হয়েছে ব্যক্তির ইচ্ছা ও পছন্দনির্ভর। ফলে চাটুকারিতা, তোষামোদি, অন্ধ আনুগত্য ও দুর্নীতি দলগুলোর রাজনৈতিক কার্যক্রমের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতি হয়েছে টাকা উপার্জনের লাভজনক পেশা।
এ ছাড়া নির্বাচন টাকার খেলায় পরিণত হওয়ায় নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদেরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। এসব কারণে চিরকালীন ক্ষমতার নেশা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে এমনভাবে পেয়ে বসে যে ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্বাচনসহ রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করে এসব প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল ও অকার্যকর করা হয়েছে। যখন যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, তারা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে, তাদের ঠিকভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। প্রশাসন, বিচার বিভাগ থেকে আরম্ভ করে সর্বত্র এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি।
আরও পড়ুনহাসিনার পতন হলেও স্বৈরাচারী শাসনের যেসব খুঁটি এখনো অক্ষুণ্ন১০ আগস্ট ২০২৪অন্যদিকে দেখা গেছে, যখন কেয়ারটেকার সরকার স্বল্পকালের জন্য এসেছে, তখন সব প্রতিষ্ঠান নির্ভয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনও করেছে। সুতরাং রাজনৈতিক সংস্কৃতির গণতন্ত্রায়ণ ও পরিশুদ্ধকরণ ছাড়া শুধু কাঠামোগত সংস্কারে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের চর্চা বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা কখনো সম্ভব নয়। এ দেশে সামরিক শাসন, স্বৈরতান্ত্রিক শাসনসহ নানা কারণে গণতন্ত্রের চর্চা ব্যাহত হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের যেমন বিকাশ ঘটেনি, তেমনি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোও শক্তিশালী হতে পারেনি।
অথচ দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রহীনতা, ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির চর্চা, টাকা ও পেশির দৌরাত্ম্য—সব মিলিয়ে রাজনীতিতে যে অগণতান্ত্রিক ও অবক্ষয়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তার সংস্কারের কোনো অর্থবহ ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু সংবিধানকে ফ্যাসিবাদী বলে ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান রচনার কথা একধরনের অপরিপক্ব ও অবাস্তব চিন্তা ছাড়া আর কিছু নয়।
রাজনীতিতে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও পারিবারিক রাজনীতির চর্চা বহাল রেখে বর্তমানের দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা একেবারেই অসম্ভব। দলের মধ্যে পরিশীলিত রাজনীতি, গণতন্ত্রের চর্চা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ‘পলিটিক্যাল পার্টি আইন’ করে ব্যাপক সংস্কারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অথবা নির্বাচন কমিশন আইনে সংশোধন এনে কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনসহ নিবন্ধনসংক্রান্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা দরকার। একই ব্যক্তি যাতে সরকারপ্রধান ও দলের প্রধান না হতে পারেন, সে-সংক্রান্ত আইন করা দরকার।
বাংলাদেশে স্বৈরশাসন বা কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থানের জন্য শুধু সংবিধানকে দোষারোপ করার একদেশদর্শী মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে অপশাসনের পেছনের কারণ যথাযথ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির দায়কে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ, সংবিধানের কোথাও একদলীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়নি। নির্বাচন কমিশন আইনেও নেই। শুধু সব প্রতিষ্ঠানে দলীয় নিয়ন্ত্রণ বহাল করার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলীয় সরকার এটা করেছে। একমাত্র নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল ছাড়া সব সময় এটা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এটা করে দলে ও সামগ্রিক রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ না হওয়ার কারণে।বাংলাদেশের রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নের কারণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে না খুঁজে শুধু সংবিধানকে দোষারোপ করে রাজনীতির প্রকৃত সংস্কার কখনো হবে না। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধান একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই সংবিধান প্রণীত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা একটি বহুমাত্রিক চেতনা। ৯০ ও ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার আধার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
কারণ, ৯০-এর গণতন্ত্র ও ২৪-এর বৈষম্যবিরোধী চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনারই অংশ। এ চেতনার বাস্তবায়ন না হওয়ায় মূলত জাতি তথা ছাত্র-জনতা ফুঁসে উঠেছে এবং গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাগ্রত গণ-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য অবশ্যই সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে কিছু সংস্কার করতে হবে। সে ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া চলমান।
বিভিন্ন সংশোধনীর কারণে বর্তমানে সংবিধানে নানান সীমাবদ্ধতা ও দোষত্রুটি থাকা সত্ত্বেও আমি মনে করি সংবিধানের কাঠামো গণতান্ত্রিক। এ ছাড়া সময়ের চাহিদা অনুযায়ী সংবিধান হালনাগাদ করা ও জনস্বার্থে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হয়। যেমন ৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি, দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনঃপ্রবর্তন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিতকরণের জন্য একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রধান না হওয়ার সাংবিধানিক বিধান ইত্যাদি। এ ছাড়া সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে সন্নিবেশিত জনস্বার্থবিরোধী অনুচ্ছেদগুলো বাতিল করা—সেটা অবশ্যই করতে হবে।
এ জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। তারা সুপারিশও প্রদান করেছে। ঐকমত্য ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পরবর্তী সংসদ এটা বাস্তবায়ন করবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংবিধান-বিশারদ ড.
বাংলাদেশে স্বৈরশাসন বা কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থানের জন্য শুধু সংবিধানকে দোষারোপ করার একদেশদর্শী মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে অপশাসনের পেছনের কারণ যথাযথ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির দায়কে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ, সংবিধানের কোথাও একদলীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়নি। নির্বাচন কমিশন আইনেও নেই। শুধু সব প্রতিষ্ঠানে দলীয় নিয়ন্ত্রণ বহাল করার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলীয় সরকার এটা করেছে। একমাত্র নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল ছাড়া সব সময় এটা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এটা করে দলে ও সামগ্রিক রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ না হওয়ার কারণে।
সংবিধানে নেতা নির্বাচন, সরকার গঠনবিষয়ক সব বিধানই গণতান্ত্রিক। শুধু ৭০ অনুচ্ছেদ ছাড়া নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগসংক্রান্ত বিধানগুলো গণতান্ত্রিক বিধিবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তবে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য বিচার বিভাগের সচিবালয় অবশ্যই সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দিতে হবে।
সুতরাং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সে জন্য ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা শুরু করতে হবে। পাশাপাশি কাঠামোগত সংস্কারও প্রয়োজন। তবে সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও দলে গণতন্ত্রচর্চার সংস্কৃতি না গড়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কখনো সম্ভব নয়। গণতন্ত্রের অবিরাম চর্চার মধ্য দিয়েই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকশিত হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোও কার্যকর ও শক্তিশালী হয়। সেটাই নিশ্চিত করা দরকার।
হাসান চৌধুরী প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক স স ক ত র র জন ত ক স স ক ত র জন ত ক স স ক ত র ব যবহ র কর র জন ত ক দ র ক র জন ত র জন ত র র জন ত ত ক সরক র র প কর দল য় ন আম দ র ণ র জন র জন য ন র জন ক ষমত দরক র দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।