চাঁদা না দেওয়ায় মাদ্রাসার পুকুরে খননকাজ বন্ধ, হেফাজতের বিক্ষোভ
Published: 19th, March 2025 GMT
চাঁদা না দেওয়ায় চট্টগ্রামের রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের লাম্বুরহাট হোসাইনিয়া জামিউল উলুম মাদ্রাসার পুকুর খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিএনপির কর্মী বলে দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার দাবি করে আজ বুধবার বিকেলে স্থানীয় লাম্বুরহাট বাজারে মানববন্ধন করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। মানববন্ধনে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষক–শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। তাঁরা চাঁদাবাজির ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় খননকাজে নিয়োজিত এক্সকাভেটরের (খননযন্ত্র) চালককে মারধর করে গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয় অস্ত্রধারী কয়েকজন ব্যক্তি। এ সময় উত্তেজিত লোকজন মুহাম্মদ এনাম (৩৫) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় রাতে মামলা দায়ের হলে পুলিশ মুহাম্মদ রাকিব (২৭) নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাম্বুরহাট হোসাইনিয়া জামিউল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার পুকুর সংস্কার এবং কবরস্থানের মাটি ভরাটের কাজ চলছে কয়েক দিন ধরে। কাজ শুরুর পর এলাকার কয়েক ব্যক্তি এসে তাঁদের দিয়ে খননকাজ না করানোর ব্যাখ্যা চান মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাতে ৮ থেকে ১০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি এসে খননকাজ বন্ধ করে দেয়। এ সময় তারা খননযন্ত্রের চালককে মারধর করে চাবি ছিনিয়ে নেয়। পরে উত্তেজিত লোকজন মুহাম্মদ এনাম নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেন। এ ঘটনায় ওই রাতেই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চাঁদাবাজি ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা করে।
লাম্বুরহাট হোসাইনিয়া জামিউল উলুম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রিদোয়ানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মাদ্রাসার পুকুরে খননকাজ করতে গেলে কিছু লোক এসে অস্ত্র দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে। প্রথমে ২০ হাজার, পরে আবার পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁরা। তিনি বলেন, মঙ্গলবার মাদ্রাসায় হামলা করা ব্যক্তিদের হাতে অস্ত্র ছিল।
মাদ্রাসায় চাঁদা দাবি করা ব্যক্তিরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি স্থানীয় লোকজনের। এ ব্যাপারে বাগোয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মুহাম্মদ আবুল বশর প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের নামে ওই মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ এসেছে, তাঁরা ইউনিয়ন বিএনপি কিংবা অঙ্গসংগঠনের কেউ নন। তাঁরা দলের কোনো পদে নেই।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, চাঁদাবাজির মামলা পেয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ খননক জ ল কজন ব এনপ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫