রমজান মাসে কোরআন নাজিল হওয়ার কথা কোরআনেই বিবৃত হয়েছে (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। কিন্তু কেন রমজানকে কোরআন নাজিলের জন্য বেছে নেওয়া হলো, তার প্রকৃত কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কে জানবেন? তবে কোরআনের বিভিন্ন আয়াত, হাদিসের ভাষ্য এবং সময়ের সাক্ষ্য থেকে বোঝা যায় বিশেষত তিনটি কারণে রমজানে কোরআন নাজিল করা হয়েছে।
১. রমজান আসমানি গ্রন্থ নাজিলের মাস
রমজানে আসমানি গ্রন্থ নাজিল করা আল্লাহ তায়ালার সাধারণ একটি রীতি এবং সে-অনুসারে রমজানেই পূর্বেকার আসমানি গ্রন্থ নাজিল করেছেন। কোরআন নাজিল সেই রীতির একটি ধারাবাহিকতা। যেমন: রাসুল (সা.
২. রমজান ও কোরআনের অভিন্ন উদ্দেশ্য
রমজান ও কোরআন উভয়ের উদ্দেশ্য এক, তা হলো তাকওয়া অর্জন। কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হলো, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)
আবার কোরআন যদিও সমগ্র মানবজাতির জন্য, তবে প্রকৃত উপকার পাবে শুধু মুত্তাকিরা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এটি আল্লাহর কিতাব। এতে কোনও সন্দেহ নেই, মুত্তাকিদের জন্য হিদায়াত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২)
৩. কোরআন সংরক্ষণ
রমজান মাস হলো কোরআন সংরক্ষণের মাস। যদিও কোরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহর হাতে। যেমন তিনি বলেছেন, আমি এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমিই এর সংরক্ষক (সুরা হিজর, আয়াত: ৯)। কিন্তু মানুষ পৃথিবীতে তার প্রতিনিধি এবং মানুষের জন্য তিনি দিয়েছেন রমজান ও কোরআন। রাসুলের (সা.) জীবন থেকে দেখি রমজান মাসকে তিনি কোরআন অনুশীলনের জন্য বিশেষভাবে বেছে নিয়েছেন এবং তার সাহাবি ও পরবর্তী অনুসারীরাও করেছেন। কোরআনে সেই সকল মহান ব্যক্তিদের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘এটা সংরক্ষণ ও পাঠ করার দায়িত্ব আমার। যখন আমি তা পাঠ করি, তখন তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর। আর তা ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব আমারই। (সুরা কিয়ামাহ, আয়াত: ১৭-১৮)
পাশাপাশি তিনি রমজানে রোজা ফরজ করে তার সঙ্গে তারাবি’র মতো এমন একটি ইবাদত জুড়ে দিয়েছেন, যা বর্তমান বাস্তবতায় হাফেজদের কোরআন চর্চার জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ। এভাবে বিশ্বজুড়ে হাফেজদের ঐক্যবদ্ধ অনুশীলন প্রমাণ করে রমজান ছাড়া তাদের জন্য কোরআন হেফাজত করা যারপরনাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত।
আরও পড়ুনরোজার শেষ দশ দিনে করণীয়৩১ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রআন ন জ ল রমজ ন ম স ন জ ল হয় ও ক রআন র জন য আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?