খুলনার ফুলতলা সদর ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লাকে কুপিয়ে ও চরমপন্থি নেতা শেখ শাহীনুল হক ওরফে বড় শাহীনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত তা-ও শনাক্ত হয়নি। এছাড়া কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, তা-ও এখনও রহস্যাবৃত রয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত বুধবার দুপুরে ফুলতলা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ফারুক মোল্লাকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় স্থানীয় কিছু লোক। ফারুক বেজেরডাঙ্গা রেললাইনের পাশে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। 

সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত ১১টার দিকে গোপালগঞ্জে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিহত ফারুক মোল্লা চরমপন্থি দলের সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ফারুক ফুলতলা উপজেলার পয়গ্রামের হাসেম মোল্লার ছেলে।

ফুলতলা থানার ওসি (তদন্ত) মো.

মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা এখনও কেউ মামলা করতে আসেনি। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও আটক করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। তবে হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। 

এদিকে গত ১৫ মার্চ রাত ১১টার দিকে নগরীর বাগমারা ব্রিজের কাছে সন্ত্রাসীদের গুলিতে চরমপন্থি নেতা শাহীন নিহত হন। এ ঘটনার পরদিন তার মা বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। নিহত শাহীন নগরীর দৌলতপুর থানার কার্তিককুল এলাকার শেখ আব্দুর রশিদের ছেলে। চরমপন্থি নেতা শাহীনের বিরুদ্ধে দৌলতপুরের আলোচিত শহীদ ওরফে হুজি শহীদ হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। 

স্থানীয় লোকজন জানান, হুজি শহীদ খুন হলেও তার একাধিক ভাইপো ও সহযোগীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছে। তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে তাদের ধারণা।   

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এসআই মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চরমপন থ ফ লতল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত