বাসসে এমডির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুব মোর্শেদকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর অপসারণ দাবি করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। পাশাপাশি বিগত ১৬ বছর বাসসের শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকদের এই দুই সংগঠনের নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টনের বাসস কার্যালয়ের সামনে ডিইউজে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসাইনের পরিচালনায় সমাবেশে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, ডিইউজের সহসভাপতি রফিক মোহাম্মদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আবু হানিফ, ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, ফখরুল ইসলাম, ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, শাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড় তোপখানা রোড হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। সভায় মাহবুব মোর্শেদকে দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদের দোসর অভিহিত করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলকেও হার মানিয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, বাসস এমডির বিগত ছয় মাসের কর্মকাণ্ড বর্তমান সরকারকে দারুণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বক্তারা বর্তমান সরকারের নীতি ও আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার পরও ডিইউজের দাবি মোতাবেক মাহবুব মোর্শেদকে অদ্যাবধি বাসস থেকে অপসারণ না করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারীকে অবিলম্বে অপসারণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সমাবেশ থেকে মাহবুব মোর্শেদকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে ২৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এফইউজ ড ইউজ র ল ইসল ম ইউজ র স
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দিতে একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ প্রতিষ্ঠার রূপরেখা নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ সংলাপে হেল্প ডেস্কের কাঠামো ও পরিচালনা পদ্ধতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা এ উদ্যোগকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়ে এর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ইউনেসকোর গ্লোবাল মিডিয়া ডিফেন্স ফান্ডের সহযোগিতায় সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন সমষ্টি।
হেল্প ডেস্ক গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন সমষ্টির নির্বাহী পরিচালক ও চ্যানেল আইয়ের প্রধান বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান।
ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সংলাপে অংশ নেন বিএফইউজের সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা ইউনিয়ন অব জার্নালিস্ট-এর সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশা, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির উপপরিচালক নিঘাত সীমা, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পরিচালক (লিগ্যাল) মো. বরকত আলী, আইন সেবা’র অ্যাডভোকেট সুজয় চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এবং হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে আমরা দলমত–নির্বিশেষে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করতে চাই।’ আইন সহায়তাকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য আইনি সহায়তা, পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করতে এই হেল্প ডেস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং আমরা এ উদ্যোগে অংশীদার হতে চাই।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রস্তাবিত হেল্প ডেস্কটি সাংবাদিক সংগঠন ও আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে। যেসব সাংবাদিক আইনি সহায়তা চান, তাঁদের তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট আইনি সহায়তা সংস্থার কাছে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন জেলা বা অঞ্চলের আইনি সেবার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
আয়োজকেরা আশা প্রকাশ করেন, প্রকল্প শেষে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণে এই হেল্প ডেস্ক মডেলটি টেকসইভাবে পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ, সহায়ক এবং অধিকতর কার্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে সাংবাদিকেরা প্রায়ই মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, ভূমি দখল কিংবা রাজনৈতিক সংবেদনশীল বিষয়ে রিপোর্ট করার কারণে আইনি জটিলতার মুখোমুখি হন। এই প্রেক্ষাপটে একটি দ্রুত, সংবেদনশীল ও কার্যকর আইনি সহায়তা কাঠামো গড়ে তোলার জন্য হেল্প ডেস্ক গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।